বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যে একটি অতি পরিচিত নাম।কাব্যে নাটকে উপন্যাসে ছোটগল্পে তাঁর সৃষ্টিকর্ম যেমন অক্লান্ত তাঁর জীবনজিজ্ঞাসাও তেমনি অন্তহীন।ছোটগল্পের সংখ্যা তাঁর অল্প ন্য,কিন্তু শিল্পরীতি ও রুপকর্মের দিক দিয়ে পুনরাবৃত্তি তাঁর সৃষ্টিতে কোথাও নেই।বনফুলের শ্রেষ্ঠ গল্পগুলি পাঠ করে বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যাইয়ের প্রতি এমন মন্তব্য না করে পারলাম না।আমি গল্পগুলির সারাংশ না করে বরং গল্পগুলির পেছনে যে থিওরি প্রয়োগ করা হয়েছে সেই থিওরির সম্পর্কে বলছি।br বনফুলের শ্রেষ্ঠ গল্পগুলিতে অভিজ্ঞতাবাদ থিওরিটির প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়।অভিজ্ঞতাবাদ হচ্ছে একটি জ্ঞান তত্ত্ব। মানুষের জ্ঞানের উৎস কি এবং জ্ঞানের ক্ষমতা এবং সীবাবদ্ধতা কি এ বিষয়ে দর্শনে বিভিন্ন তত্ত্ব আছে। সাধারণভাবে অভিজ্ঞতাবাদ বলতে এরূপ তত্ত্বকে বোঝায় যে, মানুষের ইন্দ্রিয়- অভিজ্ঞতাই হচ্ছে জ্ঞানের একমাত্র উৎস। তবে অভিজ্ঞতা কথাটি দর্শনে ব্যাপক ব্যবহৃত শব্দ। ভাববাদ এবং বস্তুবাদ উভয় তত্ত্বে অভিজ্ঞতার ব্যবহার দেখা যায়।br ‘ভিতর ও বাহির’, ‘মানুষের মন’, ‘অভিজ্ঞতা’ ও ‘তাজমহল’ গল্পগুলি অভিজ্ঞতাবাদের আলোকে বর্ণনাযোগ্য বলে আমার মনে হয়। ‘ভিতর ও বাহির’ গল্পে নবকিশোরবাবুর জীবনে ভিতর ও বাহির এই দুই মনের বিরোধের লীলা।পেশায় তিনি একজন উকিল। অভিজ্ঞতা প্রাপ্তির ফলে তাঁর জীবনে, ভিতরে বাহিরে সর্বদা বিরোধ ও জটিলতা দেখা যায়।br ‘মানুষের মন’ গল্পে মানস-রহস্যের বোধ করি চরম শিল্পপ্রকাশ হয়েছে।নরেশ ও পরেশ দুই সহোদর ভাই। একজন গোঁড়া বৈজ্ঞানিক,অন্যজন গোঁড়া ধার্মিক।দুইজনের অভিজ্ঞতা ও জীবনপন্থা ভিন্ন।তাঁদের ভাইয়ের ছেলে পলটু যখন খুবই অসুস্থ তখন তাঁদের অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটে। তাঁরা যখন নিজেদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় তখন বাস্তবতা এবং ভাগ্যর প্রতি ঝুঁকে পড়ে।অভিজ্ঞতার ফলে প্রাপ্ত ফল যখন কাজে লাগেনা তখন মানুষের অস্তিত্ব লোপ পায়। বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যে একটি অতি পরিচিত নাম।কাব্যে নাটকে উপন্যাসে ছোটগল্পে তাঁর সৃষ্টিকর্ম যেমন অক্লান্ত তাঁর জীবনজিজ্ঞাসাও তেমনি অন্তহীন।ছোটগল্পের সংখ্যা তাঁর অল্প ন্য,কিন্তু শিল্পরীতি ও রুপকর্মের দিক দিয়ে পুনরাবৃত্তি তাঁর সৃষ্টিতে কোথাও নেই।বনফুলের শ্রেষ্ঠ গল্পগুলি পাঠ করে বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যাইয়ের প্রতি এমন মন্তব্য না করে পারলাম না।আমি গল্পগুলির সারাংশ না করে বরং গল্পগুলির পেছনে যে থিওরি প্রয়োগ করা হয়েছে সেই থিওরির সম্পর্কে বলছি।br বনফুলের শ্রেষ্ঠ গল্পগুলিতে অভিজ্ঞতাবাদ থিওরিটির প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়।অভিজ্ঞতাবাদ হচ্ছে একটি জ্ঞান তত্ত্ব। মানুষের জ্ঞানের উৎস কি এবং জ্ঞানের ক্ষমতা এবং সীবাবদ্ধতা কি এ বিষয়ে দর্শনে বিভিন্ন তত্ত্ব আছে। সাধারণভাবে অভিজ্ঞতাবাদ বলতে এরূপ তত্ত্বকে বোঝায় যে, মানুষের ইন্দ্রিয়- অভিজ্ঞতাই হচ্ছে জ্ঞানের একমাত্র উৎস। তবে অভিজ্ঞতা কথাটি দর্শনে ব্যাপক ব্যবহৃত শব্দ। ভাববাদ এবং বস্তুবাদ উভয় তত্ত্বে অভিজ্ঞতার ব্যবহার দেখা যায়।br ‘ভিতর ও বাহির’, ‘মানুষের মন’, ‘অভিজ্ঞতা’ ও ‘তাজমহল’ গল্পগুলি অভিজ্ঞতাবাদের আলোকে বর্ণনাযোগ্য বলে আমার মনে হয়। ‘ভিতর ও বাহির’ গল্পে নবকিশোরবাবুর জীবনে ভিতর ও বাহির এই দুই মনের বিরোধের লীলা।পেশায় তিনি একজন উকিল। অভিজ্ঞতা প্রাপ্তির ফলে তাঁর জীবনে, ভিতরে বাহিরে সর্বদা বিরোধ ও জটিলতা দেখা যায়।br ‘মানুষের মন’ গল্পে মানস-রহস্যের বোধ করি চরম শিল্পপ্রকাশ হয়েছে।নরেশ ও পরেশ দুই সহোদর ভাই। একজন গোঁড়া বৈজ্ঞানিক,অন্যজন গোঁড়া ধার্মিক।দুইজনের অভিজ্ঞতা ও জীবনপন্থা ভিন্ন।তাঁদের ভাইয়ের ছেলে পলটু যখন খুবই অসুস্থ তখন তাঁদের অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটে। তাঁরা যখন নিজেদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় তখন বাস্তবতা এবং ভাগ্যর প্রতি ঝুঁকে পড়ে।অভিজ্ঞতার ফলে প্রাপ্ত ফল যখন কাজে লাগেনা তখন মানুষের অস্তিত্ব লোপ পায়।
আসল নাম বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় । জন্ম: ১৯ জুলাই, ১৮৯৯ সালে। তিনি একজন বাঙালি কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও কবি। তিনি বনফুল ছদ্মনামেই অধিক পরিচিত। অবিভক্ত ভারতবর্ষের বিহার রাজ্যেরমনিহারীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের পিতার নাম ডা. সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায় ও মাতা মৃণালিনী দেবী। তাদের আদি নিবাস হুগলী জেলার শিয়াখালা। কিন্তু তিনি বিহারের পূর্ণিয়া জেলার মণিহারী গ্রামে জন্মগ্রহণ । প্রথমে মণিহারী স্কুলে এবং পরে সাহেবগঞ্জ জেলার সাহেবগঞ্জ উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয়ে তিনি লেখাপড়া করেন। শেষোক্ত স্কুল থেকে ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা (এন্ট্রান্স) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে তিনি আই.এস.সি, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন হাজারীবাগ সেন্ট কলম্বাস কলেজ থেকে। কলকাতা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন তবে পাটনা মেডিক্যাল কলেজে থেকে এম.বি, ডিগ্রী লাভ করেন। প্যাথলজিস্ট হিসাবে ৪০ বৎসর কাজ করেছেন। ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে স্থায়ীভাবে কলকাতায় বসবাস করতে শুরু করেন। শিক্ষকদের কাছ থেকে নিজের নাম লুকোতে তিনি বনফুল ছদ্মনামের আশ্রয় নেন। ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে সাহেবগঞ্জ স্কুলে পড়ার সময় মালঞ্চ পত্রিকায় একটি কবিতা প্রকাশের মধ্য দিয়ে তাঁর সাহিত্যিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে। নিয়মিত প্রবাসী, ভারতী এবং সমসাময়িক অন্যান্য পত্রিকায় ছোটগল্প প্রকাশ করেন। লেখক হিসেবে বনফুল হাজারেরও বেশি কবিতা, ৫৮৬টি ছোট গল্প, ৬০টি উপন্যাস, ৫টি নাটক, জীবনী ছাড়াও অসংখ্য প্রবন্ধ রচনা করেছেন। তাঁর রচনাবলীসমগ্র ২২ খণ্ডে প্রকাশিত। তাঁর সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি 'পদ্মভূষণ' উপাধি লাভ করেন। এছাড়াও তিনি শরৎস্মৃতি পুরস্কার (১৯৫১), রবীন্দ্র পুরস্কার (১৯৬২), বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জগত্তারিণী পদক (১৯৬৭)। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডিলিট উপাধি প্রদান করে ১৯৭৩ সালে। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দের ৯ ফেব্রুয়ারি তারিখে কলকাতা শহরে তাঁর মৃত্যু হয়।