আদর্শ হিন্দু হোটেল বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত একটি সামাজিক উপন্যাস। এর প্রকাশকাল ১৯৪০।[১][২][৩] ইংরেজ সময়ের পটভূমিতে এ উপন্যাসে লেখক তৎকালীন ব্রাহ্মণ সমাজের একজন 'রাঁধুনী বামুন', হাজারি ঠাকুরের জীবনকথা সুনিপুণ ভাবে তুলে ধরেছেন।[৪]br কাহিনীbr হাজারি ঠাকুর, একজন মধ্যবয়সী বাঙালি ব্রাহ্মণ, উপন্যাসটির প্রধান চরিত্র। পেশায় তিনি রাঁধুনী, রানাঘাট স্টেশনের রেল বাজারে বেচু চক্রবর্তীর ছোট খাবার হোটেলে কাজ করেন। হোটেলের বিক্রেতারা প্রায়শই প্রতারণা করত, বিশেষ করে হোটেলের ঝি পদ্ম অহরহ হোটেলের খাবার চুরি করত। হাজারি ঠাকুর এগুলোর বিপক্ষে হলেও কেবল রাঁধুনী হওয়ায় তাঁর কিছু বলার অধিকার ছিল না । তাছাড়া পদ্ম ঝি তাঁকে সুযোগ পেলেই উপহাস ও অপমান করত। ফলে হাজারি ঠাকুর তাঁর নিজের হোটেল চালু করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন।br ঘটনাক্রমে একদিন হোটেলের বাসন চুরি হয়ে যায় এবং পুলিশ নির্দোষ হাজারি ঠাকুরকে গ্রেপ্তার করে। একইসাথে তাঁর চাকরিও চলে যায়।br চোরের অপবাদ ঘাড়ে হতোদ্যম হাজারি ঠাকুর বেরিয়ে পড়েন ভাগ্যান্বেষণের আশায়। তবে তাঁর মনে অটুট থাকে নিজের একটি হোটেল খোলার স্বপ্ন। নতুন করে শুরু হয় হাজারি ঠাকুরের জীবনসংগ্রাম।br বহুদেশ ঘুরে অভিজ্ঞ হাজারি ঠাকুর নিজের মেয়ের মতন ঘোষ গোয়ালিনী কুসুম, গ্রামের অবস্থাপন্ন হরিচরণবাবুর মেয়ে অতসী এবং একজন অপরিচিত গৃহবধূর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে অবশেষে নিজের হোটেল খুলতে সক্ষম হন। এখানে তিনি তাঁর নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে যোগ করেন নিজের সর্বোচ্চ পরিশ্রম। ফলে সামান্য সময়ের মধ্যেই তার হোটেলটি এলাকার সবচেয়ে জনপ্রিয় হোটেলে পরিণত হয়।br উপন্যাসের শেষে হাজারি ঠাকুরের জনপ্রিয়তা রানাঘাট থেকে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বোম্বাইয়ের বিশাল হোটেল পরিচালনার জন্য ডাক পড়ে তাঁর। হাজারি ঠাকুর রওনা দেন বোম্বাইয়ের পথে, পেছনে পড়ে থাকে তার সংগ্রাম মুখর দিনগুলো। আদর্শ হিন্দু হোটেল বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত একটি সামাজিক উপন্যাস। এর প্রকাশকাল ১৯৪০।[১][২][৩] ইংরেজ সময়ের পটভূমিতে এ উপন্যাসে লেখক তৎকালীন ব্রাহ্মণ সমাজের একজন 'রাঁধুনী বামুন', হাজারি ঠাকুরের জীবনকথা সুনিপুণ ভাবে তুলে ধরেছেন।[৪]br কাহিনীbr হাজারি ঠাকুর, একজন মধ্যবয়সী বাঙালি ব্রাহ্মণ, উপন্যাসটির প্রধান চরিত্র। পেশায় তিনি রাঁধুনী, রানাঘাট স্টেশনের রেল বাজারে বেচু চক্রবর্তীর ছোট খাবার হোটেলে কাজ করেন। হোটেলের বিক্রেতারা প্রায়শই প্রতারণা করত, বিশেষ করে হোটেলের ঝি পদ্ম অহরহ হোটেলের খাবার চুরি করত। হাজারি ঠাকুর এগুলোর বিপক্ষে হলেও কেবল রাঁধুনী হওয়ায় তাঁর কিছু বলার অধিকার ছিল না । তাছাড়া পদ্ম ঝি তাঁকে সুযোগ পেলেই উপহাস ও অপমান করত। ফলে হাজারি ঠাকুর তাঁর নিজের হোটেল চালু করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন।br ঘটনাক্রমে একদিন হোটেলের বাসন চুরি হয়ে যায় এবং পুলিশ নির্দোষ হাজারি ঠাকুরকে গ্রেপ্তার করে। একইসাথে তাঁর চাকরিও চলে যায়।br চোরের অপবাদ ঘাড়ে হতোদ্যম হাজারি ঠাকুর বেরিয়ে পড়েন ভাগ্যান্বেষণের আশায়। তবে তাঁর মনে অটুট থাকে নিজের একটি হোটেল খোলার স্বপ্ন। নতুন করে শুরু হয় হাজারি ঠাকুরের জীবনসংগ্রাম।br বহুদেশ ঘুরে অভিজ্ঞ হাজারি ঠাকুর নিজের মেয়ের মতন ঘোষ গোয়ালিনী কুসুম, গ্রামের অবস্থাপন্ন হরিচরণবাবুর মেয়ে অতসী এবং একজন অপরিচিত গৃহবধূর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে অবশেষে নিজের হোটেল খুলতে সক্ষম হন। এখানে তিনি তাঁর নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে যোগ করেন নিজের সর্বোচ্চ পরিশ্রম। ফলে সামান্য সময়ের মধ্যেই তার হোটেলটি এলাকার সবচেয়ে জনপ্রিয় হোটেলে পরিণত হয়।br উপন্যাসের শেষে হাজারি ঠাকুরের জনপ্রিয়তা রানাঘাট থেকে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বোম্বাইয়ের বিশাল হোটেল পরিচালনার জন্য ডাক পড়ে তাঁর। হাজারি ঠাকুর রওনা দেন বোম্বাইয়ের পথে, পেছনে পড়ে থাকে তার সংগ্রাম মুখর দিনগুলো।
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পথিকৃৎ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছু কালজয়ী উপন্যাস রচনার মাধ্যমে জয় করে নিয়েছেন বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের হৃদয়। শুধু উপন্যাসই নয়, এর পাশাপাশি তিনি রচনা করেছেন বিভিন্ন ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, দিনলিপি ইত্যাদি। প্রখ্যাত এই সাহিত্যিক ১৮৯৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন, তবে তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল যশোর জেলায়। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র হিসেবে তিনি শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করেন, যার প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁর প্রথম বিভাগে এনট্রান্স ও আইএ পাশ করার মাধ্যমে। এমনকি তিনি কলকাতার রিপন কলেজ থেকে ডিস্টিংশনসহ বিএ পাশ করেন। সাহিত্য রচনার পাশাপশি তিনি শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন অতিবাহিত করেন। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর বই সমূহ এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো 'পথের পাঁচালী', যা দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হওয়ার মাধ্যমে। এই উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাণ করে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় অর্জন করেছেন অশেষ সম্মাননা। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর বই এর মধ্যে আরো উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো 'আরণ্যক', 'অপরাজিত', 'ইছামতি', 'আদর্শ হিন্দু হোটেল', 'দেবযান' ইত্যাদি উপন্যাস, এবং 'মৌরীফুল', 'কিন্নর দল', 'মেঘমল্লার' ইত্যাদি গল্পসংকলন। ১০ খণ্ডে সমাপ্ত ‘বিভূতি রচনাবলী’ হলো বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর বই সমগ্র, যেখানে প্রায় সাড়ে ছ’হাজার পৃষ্ঠায় স্থান পেয়েছে তার যাবতীয় রচনাবলী। খ্যাতিমান এই সাহিত্যিক ১৯৫০ সালের ১ নভেম্বর বিহারের ঘাটশিলায় মৃত্যুবরণ করেন। সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি মরণোত্তর 'রবীন্দ্র পুরস্কারে' ভূষিত হন।