সূচিপত্র * মুখবন্ধ * লেখকের কথা * ভুমিকা * কুরআনের আলোকে সামাজিক বিপর্যয় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ তথা খোদায়ী গজব * ইবাদত কি ও কেন? * কুরআনে বর্ণিত সামাজিক শাস্তি * সামাজিক বিপর্যয়ের কারণ * আল্লাহর ওলীদের পরিচয় ও মর্যাদা * রাসূল (দ.)-এর বিদায় হজের শেষ ভাষণ ও এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব * সামাজিক অত্যাচার ও কার্পণ্যের কুফল * মহাবিশ্ব সৃষ্টি রহস্য ব্যাখ্যা প্রদানে বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা * প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় সম্পর্কে পবিত্র কুরআন * মানবীয় কষ্ট ও স্বস্তি * মানবীয় আচরণ ও ঐশী দ-বিধান * উপসংহার
পবিত্র কোরআনের আলোকে সামাজিক বিপর্যয় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ -ডা. এ. এন. এম. এ. মোমিন ইসলামের ইতিহাস পুস্তকসমূহে ১০ই জিলহজ্বে আরাফাতের মাঠে রাসূল (দ.) যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন তাকেই বিদায় হজ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। প্রকৃতপক্ষে হযরত মুহাম্মদ (দ.) ১০ই জিলহজ্ব বিদায় হজ সম্পন্ন করার পর ‘গাদীরে খুম’ নামক স্থানে ১৮ই জিলহজ্ব তারিখেও এক ভাষণ প্রদান করেন। ভাষণটি ঐতিহাসিকভাবে ধারাবাহিক সনদের মূলে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু মানব জাতির দুর্ভাগ্য যে, মুসলমানদের ইতিহাস গ্রন্থসমূহ সাধারণভাবে এই ভাষণের মূল বিষয়বস্তু উল্লেখযোগ্য হিসাবে বিবেচনা করে নাই। তাই বিষয়টি সর্বজন বিদিত নয় এবং বাস্তব জীবনে মুসলমান উম্মাহ এই ভাষণের মূল শিক্ষা কার্যত অস্বীকার করে জাতিগতভাবে এক মহা বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে এবং এই ধর্মের রাজনৈতিক মতবাদ Theocracy বা ঐশীতন্ত্র ধর্মীয়ভাবে বাদ দিয়ে নতুন ধরণের রাজনৈতিক মতবাদ সৃষ্টি করেছে। যার ফলশ্রুতিতে ইসলাম ধর্মে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার কোনো ধর্মীয় বিধান প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। এমনকি কোনো কোনো মুসলিম বুদ্ধিজীবীও ইসলাম বিরোধী ব্যক্তিবর্গ দাবি করে থাকেন মুসলমানগণ যে তাদের ধর্মকে Complete code of Life বলে থাকে তা একটি অবাস্তব ধারনা। যদি এ ধারনা সত্য হতো তাহলে ইসলাম ধর্মে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের প্রক্রিয়ায় ইসলামের প্রাথমিক দিকেই এতো ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধের সূচনা করত না এবং এই প্রক্রিয়ায় রাজতন্ত্র, সামরিকতন্ত্র, অভিজাততন্ত্র মুসলমান সমাজে জেঁকে বসত না। এই সব শাসক গোষ্ঠী ইসলাম ধর্মের আর্থ-সামাজিক কল্যাণমূলক ও যেসকল সংস্কারমূলক কর্মসূচী পবিত্র কুরআন ও রাসূল (দ.) ঘোষণা করেছিলেন তা কার্যত বাতিল বা অকার্যকর করে দিয়েছে।
ডা. এ. এন. এম. মোমিনের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ডা. এ. এন. এম. মোমিন ১৯৫১ সালে ৪ এপ্রিল রাজবাড়ী জিলার বালিয়াকান্দি উপজেলার পদমদী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আব্দুস সামাদ, মাতার নাম সৈয়দা শামসুন নাহার। তিনি ১৯৬৬ সালে রামদিয়া বি এম বি সি হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৮ সালে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। ১৯৭২ ও ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে তিনি যথাক্রমে স্নাতক সম্মান ও এম এ ডিগ্রী লাভ করেন। ছাত্র অবস্থা থেকে তার বিভিন্ন গবেষণামূলক লেখনী দৈনিক আজাদ, দৈনিক বাংলার বাণী, বাংলাদেশ টাইমস, সাপ্তাহিক সিনেমা, সাপ্তাহিক হলিডে ও সাপ্তাহিক বিচিত্রায় প্রকাশিত হয়। ১৯৭৮ সালে তিনি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের লিয়াজোঁ অফিসার’ হিসেবে চাকুরীতে যোগদান করেন। চাকুরী সূত্রে তিনি যুক্তরাজ্যের কার্ডিফে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এ- টেকনোলজী থেকে পোষ্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন পোর্ট এ- শিপিং এডমিনিস্ট্রেশন ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি জাপান, ইতালী, শ্রীলংকা থেকে বন্দর ও জাহাজ বিষয়ক বিভিন্ন উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।