কিং রিচার্ড দ্য থার্ড (হার্ডকভার)

অবশেষে ইংল-ে শান্তি এল। সুদীর্ঘকালের গোলাপের যুদ্ধে ইংল-ের প্রভূত শক্তিক্ষয় হয়। আবার যখন পার্লামেণ্ট বসল তখন দেখা গেল অনেক বসার স্থান খালি পড়ে আছে। বোঝাই গেল কতটা মূল্য ইংল-কে দিতে হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে রাজা এডোয়ার্ডের কোন ভ্রƒক্ষেপ ছিল না, তিনি আমোদ প্রমোদেই মত্ত রইলেন। সকলের সামনেই তিনি ওসর করতেন। ভেতরে ভেতরে তিনি অবশ্য তার ক্ষমতাকে বাড়িতেই তুলছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি একটাও লড়াই হারেন নি কিন্তু তঞ্চকতার ক্ষেত্রে তিনি তাঁর গুরু মহান ওয়ারউইককেও ছাড়িয়ে গেলেন। অল্প সময়ের মধ্যে দেশের এক পঞ্চমাংশ জমি অভিজাতদের হাত থেকে তাঁর হাতে চলে এল। আপাতঃদৃষ্টিতে তাঁকে আমোদ-আহ¯œাদে মগ্ন বলে মনে হলেও আসলে তাঁর নজরদারিকে কখনও হ্রাস করেন নি। সবসময়েই সম্পদের নতুন উৎস সম্পর্কে তিনি সচেতন ছিলেন। জাহাজের সংখ্যা অনেক বাড়িয়েছিলেন এবং বিচারালয়ে বিচারও তাঁর ইচ্ছের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করত। তাঁর মস্তিষ্ক ছিল সদা-ক্রিয়াশীল। তাঁর উচ্চাকাক্সক্ষার তৃপ্তি হয়েছিল অনেক আগেই। একজন অতিস্বার্থপর মানুষ হিসেবে তিনি যা ইচ্ছে করতেন তা আদায় করে নিতেন, কোন বাধাই মানতেন না। ওঁর ইচ্ছে ছিল এলিজাবেথ গ্রে-কে বিয়ে করার এবং তাই তিনি করেছিলেন, যদিও এই বিয়েতে ফ্রান্সের রাজা অপমানিত বোধ করেন। উডভিল পরিবারের লোকেরা ছিল এডওয়ার্ডের আত্মীয়। তারা ছিল লোভী ও হীন মনের মানুষ এডওয়ার্ড তাদের প্রত্যেকের সম্পদ বৃদ্ধি করেছিলেন যদিও তাতে ক্ল্যারেন্স ও ওয়ারউইক পরিবার অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। নিজের ছেলেমেয়েদের সম্পর্কে তিনি বেশ চিন্তিত ছিলেন। তার ছিল দুই ছেলে ও পাঁচ মেয়ে। তাদের শৈশবাবস্থা থেকেই তিনি তাদের বিয়ের পরিকল্পনা করেছেন কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার এই যে তার অন্য পরিকল্পনা সফল হলেও এ ব্যাপারে সবকটি ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত তার আর কিছু চাওয়ার ছিল না, স্রেফ খাওয়া-দাওয়া, ফুর্তি করে নিজেকে নষ্ট করছিলেন। তার ভাই রিচার্ড ভাইয়ের পাশে থেকে সবকিছুর ওপর নজর রাখতেন তার উচ্চাকাক্সক্ষা কিন্তু মেটেনি।