আশিক সুপ্তির ওড়নার নিচের অংশটুকু দিয়ে চোখ, মুখ মুছে দিল। সুপ্তির চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ভুলে গেছিস কেন? কত দুষ্টমি করেছি। ছোট থেকে একসাথে বড় হয়েছি। তোর কিছু হলে আমি ঠিক বুঝতে পারি। মাঠে একসাথে খেলেছি, দৌড়াদৌড়ি করেছি। একই স্কুল কলেজে লেখাপড়া করেছি। কত দুষ্টুমি, আইসক্রিম নিয়ে কতবার ভাগাভাগি করে খেয়েছি। আমি একটু বেশি খেয়েছিলাম বলে তুই পিঠে সে কি জোরে জোরে কিল বসিয়ে দিলি! মনে নেই তোর? আমার তো সব মনে পড়ে। একদিন দুপুরে দুজনে বড় রাস্তার ঐ মাথায় সিগারেটের উচ্ছিষ্ট অংশটুকু আগুনে ধরিয়ে ইচ্ছেমতো ফুঁকলাম। আমি নাক দিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে পারলেও তুই পারিসনি। দুই টান দেওয়ার পর তোর সে কি কাশি। কাশতে কাশতে চোখ লাল হয়ে পানি পড়া শুরু হলো। হঠাৎ চাচা বাড়ি যাওয়ার সময় দুজনকে দেখে ফেলল। বাড়িতে এনে দুজনকে কান টানল। দুইবার কান ধরে উঠবস করিয়ে উঠোনের লিচু গাছতলায় গামছা দিয়ে কিছু সময় বেঁধে রাখল। মুক্তি বু আমাদের দুই আসামিকে দেখে খিলখিল করে হাসল।’ আশিকের কথা শুনে সুপ্তিও এবার ফিক করে হেসে উঠল। আশিকও হাসছে। খুব শান্তি পাচ্ছে সে। তার খুব ভালো লাগছে। পলকহীন চোখে সুপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে। কতদিন পর সুপ্তির এমন প্রাণোচ্ছল হাসি দেখল। আশিক চায় এমন করেই সুপ্তির ঠোঁটে সবসময় হাসি লেগে থাকুক। তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখুক। সুপ্তির মনের কথা, ইচ্ছের কথা, ভালো লাগার কথা অকপটে বলুক। সুপ্তিটা কেন দূরে দূরে থাকতে চায়? সুপ্তি হাসি থামিয়ে ভার গলায় বলল, ‘সব মনে আছে। শৈশবের স্মৃতি কেউ ভুলতে পারে না। শৈশব কেন? কোনো স্মৃতিই মানুষ ভুলতে পারে না। আজ যা ঘটবে কালকেই তা স্মৃতি হয়ে থাকবে। ক্ষণেক্ষণে মনে পড়বে।’