'বিশ্বজনীন ঐতিহ্য' মূলত ফারসি ভাষা ও সাহিত্য সংরক্ষণ, শিক্ষা ও প্রসারের বিষয়ে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বর্তমান সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল উজমা খামেনেরী (মুদ্দাজিল্লুহু)-র বিভিন্ন সময়ে প্রদত্ত দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যসমূহের নির্বাচিত অংশের সংকলন; বিভিন্ন সময়ে ইরান ও ইরানের বাইরের ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক, গবেষক, নীতিনির্ধারক, শিক্ষার্থী, কবি, সাহিত্যিক, সম্পাদক ও গণমাধ্যমের অনুষ্ঠান পরিকল্পনাকারী ও পরিচালকবৃন্দের প্রতিনিধিগণের সভা এবং তাঁদের সাথে সাক্ষাতকালে তিনি এইসব বক্তব্য প্রদান করেন । ফারসি ভাষা পৃথিবীর প্রাচীনতম ভাষাগুলোর অন্যতম। এ ভাষার ইতিহাস কয়েক হাজার বছরের পুরোনো। এটি এমন এক প্রাচীন ভাষার উত্তরাধিকার, যার সমসাময়িক কালের অনেক ভাষাই বর্তমানে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সেদিক বিবেচনায় ফারসি ভাষা বর্তমান পৃথিবীর জীবন্ত ভাষাসমূহের মধ্যে অন্যতম প্রাচীন ভাষা। এটি মূলত আর্য জাতিগোষ্ঠীর ব্যবহৃত ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। খ্রিস্ট-জনের প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে দক্ষিণ রাশিয়ার দানিয়ুব নদীর পূর্বের ও কাফকাজ পর্বতমালার উত্তরের এবং আওরাল পাহাড়সমূহের পশ্চিমের মধ্যবর্তী অঞ্চলে যে জনগোষ্ঠী বসবাস করতো জার্মান নৃবিজ্ঞানী ফ্রেনজ বপ (Franz Bopp) ওই জনগোষ্ঠীর ভাষাকে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা এবং ওই জনগোষ্ঠীকে ইন্দো-ইউরোপীয় জনগোষ্ঠী নামে নামকরণ করেন। এই গোষ্ঠীভূক্ত অন্যান্য ভাষাগুলো হচ্ছে সংস্কৃত, আবেস্তীয়, আর্মানীয়, প্রাচীন শ্লাভিক, প্রাচীন গ্রীক, লাতিন, প্রাচীন জার্মানি, প্রাচীন কেলতিক প্রভৃতি। ধারনা করা হয় আনুমানিক ২৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মূল ভাষা হতে বিশ্লিষ্ট হয়ে এই গোষ্ঠীর প্রাচীন ভাষাগুলোর জন্ম হয়েছিল। এর অনতিকাল পরেই এরা ইউরোপ ও এশিয়ার স্থানে স্থানে ছড়িয়ে পড়ে।