আত্মজৈবনিক এই বইটির নামকরণ ও অনবদ্য একটি ভূমিকা লিখেছেন গ্রন্থকারের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধু-সহপাঠী, পরম সুহৃদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, যশস্বী শিক্ষাবিদ-সাহিত্যিক। 🌱 আবু তালেব সিদ্দিকী ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের ছাত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের করিডোরে হেঁটেছেন গুরুত্বপূর্ণ সময়কালে; ঊনসত্তরের গণআন্দোলন, উত্তাল হয়ে উঠা দেশমাতৃকা, ছাত্র রাজনীতির বিকশিত স্ফুলিঙ্গে স্বাধীন চিন্তা চেতনায় আলোকিত আবেগে ভাসতে থাকা গ্রন্থকার তখন স্বাধীনতার স্বপ্নে শিহরিত। সংগঠিত মুক্তিযুদ্ধের পরিক্রমায় নিজেকে জড়িয়ে স্বাধীন দেশের নাগরিকত্ব লাভে অভাবনীয় সুখবোধে সাহিত্যিক হওয়ার ইচ্ছে নিয়ে নয়, বরং সহজাত ঔদার্যবোধে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লিখতে শুরু করলেন। দু'টো বই প্রকাশিত হলো। "অবচেতনে অবয়ব" শিরোনামে একটি অগোছালো কবিতাগ্রন্থ প্রকাশিত হলে কেউ প্রশংসায় ভাসিয়েছেন কবিকে, কেউ বলেছেন প্রথম কাব্যগ্রন্থ হলেও বড্ড কাব্যিক। নস্টালজিক অভিজ্ঞতার বর্ণালী বর্ণনায় খেলার ছলে একটি পত্রিকায় অনেক দিন কলাম লিখে পত্রিকা পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরে 'অবচেতনে আলিঙ্গন' শিরোনামে পুস্তকারে প্রকাশিত হয়েছিল এ সব কলামের সংললন। এক সময় স্বল্প কালের জন্য একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতায়, বাস্তবতায় অনুভবের তীব্র আনন্দ-বেদনায় রচিত হয়েছে 'আলোয় আর ছায়ায় জড়ানো জীবন'। 🔰 গ্রন্থকারের জন্ম ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৯ সালে নওগাঁ জেলার বদলগাছীর প্রত্যন্ত এক গ্রামে। গ্রামের স্কুলেই তার হাতেখড়ি, তারপর মফস্বল শহর হয়ে রাজধানীতে আগমন। আবু তালেব সিদ্দিকী গ্রাম থেকে শহরে, উচ্চশিক্ষা এবং কর্মজীবনে রাজধানীর বুকে স্বাচ্ছন্দ্যে সাঁতার কেটেছেন সময়ের নদীতে। তিনি বেহিসেবী ছিলেন না কোন বয়সেই। তাই নম্র ও মৃদু লয়ে প্রবাহমান জীবনের ছন্দে গ্রন্থিত এই বইটি পড়লে পাঠক খুব সহজে গ্রন্থকারের মনের আকাশে বিচরণ করতে গিয়ে একজন সাধারণ মানুষকে খুঁজে পাবেন। গ্রন্থকারের স্মৃতিচারণামূলক এ গ্রন্থটি পাঠককে নিয়ে যাবে কখনও স্বপ্নরাজ্যে,আবার কখনও নোঙর করবে বাস্তবতার কঠিন সত্যান্বষণে।