রাস্তা জুড়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেছে লোকজন। বুঝতে পারছি, ক্রমেই নিকটবর্তী হচ্ছে সে। কানে আসছে সাইরেনের শব্দ। প্রার্থনা করছি মহামহিমের কাছে। দয়া কর, হে ঈশ্বর, আরও দ্রুত সাহায্য পৌছার ব্যবস্থা করে দাও। সামনেই একটা ইটের টুকরো পড়ে থাকতে দেখে তুলে নিলাম হাতে। গড়ান দিয়ে চিৎ করলাম শরীরটা। আড়াল থেকে বেরিয়ে এসেছে জুনিয়র। রয়েছে দশ ফুটেরও কম দূরত্বে। হাতের অস্ত্রটা বাড়িয়ে ধরেছে সামনে। আমাকে চিৎ হয়ে পড়ে থাকতে দেখে গতি হ্রাস করল সে। কপালে চকচক করছে বিন্দু বিন্দু ঘাম। হিংস্র অভিব্যাক্তিতে সামান্য বাঁকা হয়ে আছে ঠোঁট। হাতে ধরা ইটটা ছুঁড়ে মারলাম তার উদ্দেশে। তবে কয়েক ইঞ্চির জন্য মিস হল টার্গেট। আরও দুকদম সামনে এগোল সে। দুপাশে পা রেখে দাঁড়ালো আমার উপরে। ঠিক যেভাবে সেই রাতে তার উপর দাঁড়িয়েছিলাম আমি। হাতে ধরা অস্ত্রটার দিকে তাকালাম। এতক্ষণে চিনতে পারলাম অস্ত্রটা, একটা রিভলবার...ছটা গুলি। ইতোমধ্যে পাঁচটা গুলি চালিয়েছে সে। আর একটাই বাকী আছে। ‘অতঃপর পিতার উপর রক্ত ঝরবে পুত্রের। পিতার রক্ত ঝরবে পুত্রের উপর,’ আওড়াতে লাগলো সে। ‘আর তাদের উপর নেমে আসবে আমার চূড়ান্ত শাস্তি। বাতাসে তাদের ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়বে...’ দুই কনুইয়ে ভর দিয়ে পিছিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। অসার বাম পা থেকে গড়ানো রক্তের ট্রেইল রয়ে যাচ্ছে পেছনে। স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি জুনিয়র টেস্টারের চোখের দিকে। অপেক্ষা করছি শেষ বুলেট আর অসীম অন্ধকারের জন্য। বুনো উল্লাস তার দুচোখের তারায়। এখনও কথা বলে যাচ্ছে সে। তবে তা এখন পরিণত হয়েছে অস্পষ্ট বিড়বিড়ানিতে। রিভলবারের হ্যামার টেনে ধরেছে বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে। হাতটা তিরতির করে কাঁপছে তার। আর বরফের মত স্থির জমে গেছি আমি। সময় যেন স্থির হয়ে গেছে। এক একটা সেকেন্ড যেন এক একটা যুগ। আচমকাই ঝাঁকি খেল জুনিয়রের দেহ। ঝুঁকলো সামনের দিকে। যেন পেছন থেকে ধাক্কা দিয়েছে কেউ। চেহারায় হতবিহ্বল ভাব। সেই সাথে গর্জে উঠলো অস্ত্র।