কী নিয়ে এই বই? ‘নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন’ ‘উদ্যোক্তা তৈরির একটি কারখানা।’ উদ্যোক্তাবিষয়ক প্রশিক্ষণ, ১৭টি বিষয়ে স্কিলস শেখানো, মূল্যবোধ, লিডারশিপ ও ভলান্টিয়ারিং চর্চা সংক্রান্ত এক অনন্য প্ল্যাটফরম। এটি বাংলাদেশের একমাত্র প্ল্যাটফরম, যেখানে প্রতিদিন বিনামূল্যে অনলাইনে ও অফলাইনে এই প্রশিক্ষণগুলো দেওয়া হয়। এই প্ল্যাটফরমের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি সারাদেশের ৬৪ জেলা থেকে মাত্র ১৬৪ জন তরুণ-তরুণী নিয়ে। গত ৬ বছরে এই ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা বেড়ে বর্তমানে ১০ লাখে এসে দাঁড়িয়েছে। এখন এটি একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান, যার প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট এবং মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ। প্রতিটি ব্যাচে টানা ৯০ দিন করে অনলাইনে ও অফলাইনে ৪৬০টি কন্টেন্ট দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন। এই প্রশিক্ষণ নিয়ে ইতোমধ্যে বদলে গেছে লাখো তরুণ-তরুণীর জীবন। তাঁরা হয় উদ্যোক্তা হয়েছেন, না হয় চাকরিতে ভালো করছেন। কেউ আবার চাকরি করেও পার্টটাইম উদ্যোক্তা হয়েছেন। ছাত্রাবস্থায় পার্টটাইম উদ্যোক্তা হয়েছেন অনেক উদ্যোমী শিক্ষার্থী। হতাশা কাটিয়ে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন কেউ কেউ। প্রবাসে বসেও বাংলাদেশে ব্যবসা করছেন অনেকে। নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন শুধু স্বপ্ন দেখায়নি, কীভাবে স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হয় তা শিখিয়ে যাচ্ছে টানা ৯০ দিন ধরে একেকটি ব্যাচে। ইতোমধ্যেই টানা ২৪টি ব্যাচ শেষ হয়েছে, চলছে ২৫তম ব্যাচ। বদলে গেছে এই সব তরুণদের জীবনÑ তাঁরা এখন একেকজন দক্ষ মানুষ, পজিটিভ, সাহসী ও মানবিক মানুষ। প্রতিদিন সেশান চর্চা, প্রতিমাসে ৬৪ জেলায় ও ৫০টি দেশে অনলাইন এবং অফলাইন মিটআপের মধ্য দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে ব্যাপক সম্পর্ক, পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং, সেলস হাব ও নেটওয়ার্কিং। এদের মধ্য থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বদলে যাওয়া ৯৯ জন প্রান্তিক উদ্যোক্তার গল্প তুলে ধরা হয়েছে এই বইতে। এই বই আপনাকে সাহস দিবে একজন এসএমই উদ্যোক্তা হতে। এগুলো আপনাদেরই জেলার, উপজেলার বা পাশের গ্রামের গল্প, যা আপনাকে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করবে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে । ইকবাল বাহার।
একজন উদ্যোক্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, মেন্টর, ইন্সপিরেশানাল স্পিকার, নিউজ প্রেজেন্টার ও বিজনেস প্রোগ্রাম অ্যাংকর। জন্মস্থান ফেনীর ফুলগাজিতে । তিনি চার্টার্ড আকাউনটেন্সি (ইন্টার), এমকম ও এমবিএ করেন। ইন্টারনেট কোম্পানিতে চাকরি দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন। এক সময় সেই রকম বিশাল একটি ইন্টারনেট কোম্পানির মালিক হন তিনি। চাকরি জীবনেও অত্যন্ত সফল ইকবাল বাহার খুব অল্প বয়সে একটি মাল্টিনেশানাল। কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার হন। মাল্টিনেশানাল কোম্পানির লোভনীয় চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে চাকরি করবো না চাকরি দেব’ এই দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করেন নিজের কোম্পানিতে। উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন চাকরি জীবনের শুরুতেই। উদ্যোক্তা হয়ে উঠার গল্পটা এত সহজ ছিল না। ছিল ব্যাপক বাধা, অনিশ্চয়তা ও হেরে যাবার সম্ভাবনা। কিন্তু তিনি ছিলেন দৃঢ়চেতা ও ব্যাপক লেগে থাকা একজন স্বপ্নবাজ মানুষ। আজ তিনি অপ্টিমেক্স কমিউনিকেশন লিমিটেড ও আলাদীন ডট কম নামক দুটি কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর। সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য মেধাবী তরুণদের কর্মসংস্থান। এখানেই থেমে থাকেননি ইকবাল বাহার, নেমেছেন বাংলাদেশের ৬৪ জেলার হাজার হাজার তরুণ-তরুণীকে চাকরি না খুঁজে উদ্যোক্তা হবার স্বপ্ন দেখাতে। শুধু স্বপ্নই নয়, সেই স্বপ্ন কীভাবে বাস্তবায়ন করতে হয় তার লক্ষ্যে শুরু করেছেন এক বিশাল কর্মযজ্ঞ উদ্যোক্তা তৈরির অনলাইনে কর্মশালা এবং তা বিনা মূল্যে । ইতিমধ্যে ৬০০০ জন তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন গত ১৮০ দিন ধরে, প্রতিদিন। যাতে সবাই একজন ভালো মানুষ হয়ে নিজের বলার মতো একটা গল্প’ তৈরি করতে পারে।