"জল সমাধি" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: হঠাৎ একটা দমকা বাতাস পরীর পিঠ ছুঁয়ে গেল। সে বেশ ভয় পেল। দোলনা থেকে উঠে এদিক ওদিক তাকাতেই ওর শরীর হিম হয়ে উঠল। পরী দেখল, বাসার নিচে শুভ্র ধীরে ধীরে হেঁটে চলেছে, কিন্তু তাকে এমন দেখাচ্ছে কেন? তার শরীর থেকে আলাে যেন ঠিকরে পড়ছে। পরীর অবাক হওয়ার আরও বাকি ছিল। শুভ্রের পিছু পিছু আরও চারটা ছায়া হাঁটছে। যেমন ছায়া সে নেপালের রাস্তায় দেখেছিল, ঠিক তেমন। পরীর খুব সন্দেহ হলাে, সে আর স্থির থাকতে পারল না। দৌড়ে ছাদ থেকে নেমে রুমে গিয়ে দেখল সত্যিই শুভ্র নেই। পরী এখন কাকে ডাকবে, কী করবে ভেবে পেল না, সে নিচে গিয়ে ডাইনিং রুমের দরজাটা খুলে দৌড় দিলাে শুভ্রের কাছে। ততক্ষণে ওই চারটি ছায়া একসাথে একটা উজ্জ্বল সাদা কলস শুভ্রের মাথার উপর ধরে আছে, তা থেকে শুভ্রের মাথার উপর দুধ পড়ছে। তার পুরাে শরীর দুধে ধুয়ে যাচ্ছে। একটু পরে সেই কলস থেকে পানি পড়তে লাগল। পরী আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারল না। ওখানেই জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেল। শরীরে কারও হাতের স্পর্শে পরীর শরীর কেঁপে উঠল। সে চোখ খুলেই এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে ও বাসার ছাদে পড়ে আছে। হঠাৎ ছাদের কোনার দিকে তার চোখ গেল, আবার শক খেল সে। সামনে সেই উজ্জ্বল আলাের চারটা মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। এরা কোনাে মানুষ না, সেটা পরী বুঝতে পেরেই বির বির করে আয়াতুল কুরসিসহ আরও কিছু সুরা পাঠ করতে লাগল। পরীকে অবাক করে দিয়ে ওই চারটি ছায়াও তার চারপাশে বসে আয়াতুল কুরসি পড়তে লাগল। কোথায় তারা চলে যাবে, তা না করে ওরাও সূরা পড়তে লাগল। পরী এবার থেমে কাঁপা কণ্ঠে বলল, আপনারা কী চান আমার কাছ থেকে? কেন আমাকে এত হয়রানি করছেন? উজ্জ্বল একটি ছায়া এসে পরীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই একসাথে সবাই অদৃশ্য হয়ে গেল। এটা দেখে পরীর বুকটা কেঁপে উঠল। হাজারাে প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগল। সে আস্তে আস্তে নিচে নামলাে। রুমে ঢুকে আরও একবার বিস্মিত হলাে, কারণ শুভ্র ওর জায়গায় ঠিকমতাে শুয়ে আছে! পরীর ভাবনার জগতে তখন হাজারাে প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। সে আনমনে ওয়াশরুমে গিয়ে গােসল সেরে নিলাে। তারপর শুভ্রের কাছে এসে ওর পাশে বসল। তার বুকে হাত দিয়ে মনে মনে বলল, তুমি কে শুভ্র? ওদের সাথে তােমার কী সম্পর্ক?'