প্রাগৈতিহাসিক ঘটনা পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়। ৬ কোটি ৬০ লক্ষ বছর আগে বিলুপ্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বিশাল আকৃতির ডাইনোসর গুলো পৃথিবীতে ১৬ কোটি বছর রাজত্ব করেছিল। আর এই দীর্ঘ সময় রাজত্বের পর মহা শুন্য থেকে এক বিশাল উল্কা পিণ্ড বর্তমান মেক্সিকোর চিকশুলাব নামক এক জায়গায় আছড়ে পড়ে আর এর প্রভাবে তাৎক্ষনিক ক্ষয়ক্ষতি সহ দীর্ঘ সময় ধরে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যায় যাকে বলে বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে ধীরে ধীরে ডাইনোসরদের বিলুপ্তি ঘটে। অনেকে ধারনা করনে যে, ডাইনোসরদের বিলুপ্তি সহ ওই সময়ে গন বিলুপ্তির ঘটনায় ৭০ percent প্রাণীর ধ্বংস হয়। এই সময়ের গন বিলুপ্তিকে বলে ট্রিয়াসসিক-জুরাসিক ( বা KT Mass Extinction বা K-Pg) গন বিলুপ্তি। ট্রিয়াসসিক-জুরাসিক (K-Pg Mass Extinction) সময়ে ডাইনোসর বিলুপ্তির আরও আগে ৪ বার মহা বিপর্যয় ঘটেছে যেখানে পারমিয়ান- ট্রিয়াসসিক (Permian-Triassic Mass Extinction, 252.0 Ma) সময়ে ৯০ percent পর্যন্ত প্রাণী মারা গিয়েছিল। পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য এই মহা বিপর্যয় ঘটেছে বলে অনেক ভূতাত্ত্বিক গবেষক প্রমাণ দেখিয়েছেন। সুতরাং অতীতের যত মহা দুর্যোগ তার বেশির ভাগই বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী। আধুনিক যুগেও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি, টেকনোলজির উন্নতি, ৬ষ্ঠ গন বিলুপ্তির (6th Mass Extinction) জন্য অন্যতম প্রভাবক। আর এই প্রক্রিয়া এখন চলমান। অনেক বিজ্ঞানী প্রমাণ দেখিয়েছেন, আমরা আমাদের চারিপাশে তাকালেও তার প্রমাণ পাই। যেমন কিছু প্রজাতির পাখি আমরা আর এখন দেখি না আমাদের চারিপাশে। এমনি অনেক নাম না জানা প্রাণী ইতিমধ্যেই বিলুপ্তু হয়েছে। টেকনোলজির উন্নতির সাথে সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে আর এর ফলে করোনা ভাইরাস সমস্ত পৃথিবীতে মুহূর্তের মধ্যেই ছড়িয়েছে। কিন্তু এই করোনা ভাইরাস গত শতাব্দীতে এতোটা ভয়াবহ ভাবে দ্রুত ছড়ায়নি। বিশ্বায়ন নিঃসন্দেহে মানুষের জন্য অনেক সহজ করে দিয়েছে। পৃথিবী এখন সবার হাতের মুঠোয় তবে এটা ঠিক যে এই বিশ্বায়নের জন্যই প্রাণী কুলের বিপর্যয় ও সহজতর হতে পারে। আধুনিক অস্ত্র যেমন পারমানবিক অস্ত্র মুহূর্তে ধ্বংস করে দিতে পারে। পারমানবিক অস্ত্রের আঘাত চোখে দৃশ্যমান হলে ও পরিবেশ ও জল বায়ু সম্পর্কিত দুর্যোগ দৃশ্যমান নয়, দীর্ঘ মেয়াদে বোঝা যায়। ৬ষ্ঠ গন বিলুপ্তির চলমান প্রক্রিয়ায় ভীষণভাবে প্রভাবিত হতে পারে একটি জাতি আর সেটা হল মানব জাতি। এর প্রধান কারণ হল পরিবেশর জন্য হুমকি হয় এমন কাজ করা। এই মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ থেকে মানুষ ই মানুষ কে রক্ষা করতে পারবে। সবার আগে দরকার সচেতন । মানুষ যদি এই পৃথিবী ছেড়ে অন্য কোনো গ্রহে আবাস গড়তে পারে তবেই মানুষের বিলুপ্তি হওয়া থেকে রক্ষা করা যাবে। বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং তার ” Brief answer to the Big question” বইটিতে সে সমন্ধে বিস্তারিত লিখেছেন। তিনি আরো পৃথিবীর মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছেন যে মানুষ যদি অন্য কোনো গ্রহে আবাস গড়তে না পারে তবে ৬ কোটি বছর ধরে পৃথিবী তে একদা বসবাসকারী ডাইনোসদের মত করুন পরিণতি হবে। সুদূর ভবিষ্যতে মানুষ সৃষ্ট হোক আর প্রাকৃতিক কোন কারণেই হোক মানুষকে তার প্রজন্ম কে রক্ষার জন্য অবশ্যই অন্য কোন গ্রহে আবাস গড়া প্রয়োজন তার জন্য সব থেকে উপযুক্ত গ্রহ মঙ্গল-গ্রহ ছাড়া আর কি কিছু আছে?