২৫ মার্চের ভয়াবহ রাত্রির পর তারা মিরপুরের বাঙালি পরিবারগুলোকে বিভিন্ন কৌশলে মিরপুরের ভিতরে আটকে রাখার চেষ্টা করে আর তাদের উপর নির্যাতন ও হত্যাকান্ড চালাতে থাকে। ২৫ শে মার্চের সেই নারকীয় রাত্রীর পর বাঙালির জন্য ভয়ানক বিপরর্যয় নেমে আসে মিরপুরে। প্রতিটি মুহূর্তেই অবাঙালিদের দ্বারা আক্রান্ত হয় মৃত্যুর আশঙ্কা। সাথে সাথে প্রতিরোধের চিন্তা। পরের সপ্তায়ই প্রাথমিক প্রতিরোধ সংগঠিত করতে গিয়ে শহীদ হন লেখক এর মেজভাই শেখ হাফিজুর রহমান (খোকন)। এপ্রিল মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যেসম বাঙালি মিরপুরে আটকা পড়েছিল, তাদের সামান্য সংখ্যক পালাতে পেরেছিল, বাকিরা বিহারিদের হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছিল। সারা মিরপুরে ১১ টি বধ্যভূমিতে তারা হাজার হাজার বাঙালিকে জবাই করে হত্যা করেছিল। তেমনিভাবে ১৬ ডিসেম্বর তারিখে দেশ স্বাধীন হলেও মিরপুর দখলে রেখেছিল সশস্ত্র বিহারীরা। সামরিক পোশাক ফেলে দিয়ে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের সাথে যোগ দিয়েছিল পরাজিত কিছু পাকিস্তানী সেনা। দীর্ঘ দেড় মাস তারা দখল অব্যাহত রেখেছিল। স্বাধীন দেশের রাজধানীর উপকণ্ঠের একটা ছোট্র এলাকাকে মুক্ত করতে গিয়ে আবার লাড়াইয়ের আয়োজন করতে হয়। সে লরাই ছিলো সিভিলিয়ান গেরিলা যোগ্ধাদের অস্ত্রহীন করে আত্মসমর্পণ করানোর জন্য। সেখানে বেধে যায় যুদ্ধ। সে যুদ্ধে শহীদ হন সেনা ও পুলিশের দেড় শতাধিক সুপ্রশিক্ষিত যোদ্ধা। এ ছিল একটা স্বাধীন দেশের জন্য ভীষণ মর্মান্তিক বিয়োগান্তক ঘটনা। ঢাকার এসপি জিয়াউল হক খান লোদী ও লেফটেন্যান্ট সেলিমের মতো বীর যোদ্ধারা শহীদ হন সে যুদ্ধে। অত:পর আর্টিলারি ও পদাতিক বাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণে ৩১ জানুয়ারি ১৯৭২ তারিখে অস্ত্র সমর্পণ করে সশস্ত্র অবাঙালিরা। ইতিহাসের এসব বিষয় অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য। বেরিয়ে এসেছে মহান চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান কবে কোথায় কিভাবে নিহত হয়েছিলেন সে তথ্য।