"বাংলাদেশ : শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনকাল" বইটি সম্পর্কে কিছু কথা: Bangladesh: Era of Sheikh Mujibur Rahman-7916 ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত হবার পর প্রথম। মুদ্রণ মাত্র এক মাসের মধ্যে নিঃশেষিত হয়। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ সম্পর্কে লেখক মওদুদ আহমদের বিস্তৃত মূল্যায়ন শুধু বাংলাদেশেই নয় পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও আগ্রহ সৃষ্টি করেছিল সেই সময়ে। বাংলা ভাষার বৃহত্তর পাঠক সমাজের কাছে পৌঁছে। দেবার জন্য বইটির বাংলা সংস্করণ প্রকাশিত হয়। ১৯৭৫ সালের আগস্টে সামরিক অভ্যুত্থানে শেখ মুজিবুর রহমান মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তী ঘটনা প্রবাহে দেখা যায় একটি সরকারকে উৎখাত করা সহজ হলেও ক্ষমতা দখলের পর শাসক হিসেবে বৈধতা অর্জন সহজ নয়। এশিয়া এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় স্বাধীনতা লাভের পূর্বে জাতীয়তাবাদী নেতৃবর্গ উদারনৈতিক গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরবর্তীতে নিজেরাই প্রত্যাখ্যান করেন। কেন? এর উত্তর খুঁজেছেন লেখক। মুক্তিযােদ্ধা, হানাদার বাহিনীর সহযােগী, প্রতিষ্ঠান। হিসেবে সামরিক বাহিনী ও বিবিধ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ও পদক্ষেপ কি সঠিক ছিল? বিশ্লেষণ করেছেন লেখক সমকালীন রাজনৈতিক ঘটনা। প্রবাহের একজন ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষক ও আইনজ্ঞ হিসেবে এবং বাংলাদেশের সমকালীন ইতিহাসের মহত্তম চরিত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সীমাবদ্ধতার প্রসঙ্গ আলােচনা করেও তার কীর্তির উচ্চ মূল্যায়ন করেছেন।
Moudud Ahmed ১৯৪০ সালের মে মাসের ২৪ তারিখ নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগণঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং মা বেগম আম্বিয়া খাতুন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে মওদুদ আহমেদ চতুর্থ। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিএনপির ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান পাশ করে বৃটেনের লন্ডনস্থ লিঙ্কন্স্ ইন থেকে ব্যারিস্টার-এ্যাট-ল' ডিগ্রি অর্জন করেন। লন্ডনে পড়াশুনা করে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। তিনি ব্লান্ড ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলনে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ব্যারিস্টার মওদুদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১-এ ইয়াহিয়া খান কর্তৃক আহুত গোলটেবিল বৈঠক তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ছিলেন। ১৯৭৭-৭৯ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৭৯ সালে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং তাকে উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮১ সালের মে মাসে জিয়াউর রহমান নিহত হন এবং এক বছরের ভেতর হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন। ১৯৮৫ এর নির্বাচনে মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সরকারের তথ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এক বছর পর ১৯৮৬ এ তাকে আবার উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৮৯ সালে তাকে শিল্প মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং এরশাদ তাকে উপ-রাষ্ট্রপতি করেন। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকার জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১-এ মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালেও তিনি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাঁচবার মওদুদ আহমেদ নোয়াখালী জেলার কম্পানীগঞ্জ উপজেলা থেকে নির্বাচিত হন। অষ্টম জাতীয় সংসদে মওদুদ আহমেদ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। মন্ত্রীত্ব ছাড়াও মওদুদ আহমেদ জিয়াউর রহমানকে বিএনপি প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন। এই দলের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি এরশাদের জাতীয় পার্টির সংগঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।