‘মুক্তিযুদ্ধ কেন অনিবার্য ছিল’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ বাংলাদেশের অভ্যুদয় ছিল ইতিহাসের এক অনিবার্যতা। ইয়াহিয়াসহ পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ও ভুট্টোর একগুঁয়েমি, অপরিণামদর্শিতা ও উচ্চাভিলাষ আসলে সেই অনিবার্যতাকেই ত্বরান্বিত করেছে। মুক্তিযুদ্ধ কেন অনিবার্য ছিল বইটিতে আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের পটভূমি, বিশেষ করে যুদ্ধ শুরুর পূর্ববর্তী দিনগুলোর ঘটনাপ্রবাহের একটি অন্তরঙ্গ ও বস্ত্তনিষ্ঠ বিবরণ পাওয়া যাবে। বইটির লেখক ড. কামাল হোসেন ছিলেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষের অন্যতম কৌঁসুলি। প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান আহূত গোলটেবিল বৈঠকেও আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের একজন আইনি পরামর্শদাতা হিসেবে তিনি যোগ দেন। ১৯৭১-এর মার্চে ঢাকায় ইয়াহিয়া, ভুট্টো ও তাঁদের সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনায়ও বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের পক্ষে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অসহযোগ আন্দোলন চলাকালীন অনেক নীতি ও সিদ্ধান্ত প্রণয়নের সঙ্গেও তিনি সরাসরি যুক্ত ছিলেন। মোটকথা আমাদের ইতিহাসের ওই কালপর্বের অনেক ঘটনারই তিনি ছিলেন একাধারে প্রত্যক্ষদর্শী, সাক্ষী ও সক্রিয় অংশীদার। সেদিক থেকে ড. কামালের এই বইটির একটি ঐতিহাসিক মূল্য বা তাৎপর্য আছে। তৎকালে সংবাদপত্রে এসেছে এবং যা একান্তই ভেতরের ঘটনা—উভয়ই লেখক বিশ্বস্ততার সঙ্গে এ বইয়ে তুলে ধরেছেন।
ড. কামাল হােসেন জন্ম ১৯৩৭ সালের ২০ এপ্রিল। আইনবেত্তা ' ও রাজনীতিক। ১৯৫৮ সালে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিসিএল এবং ১৯৬৪ সালে আন্তর্জাতিক আইনে পিএইচডি ' ডিগ্রি লাভ করেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর পক্ষের অন্যতম কৌঁসুলি হিসেবে এবং পরবর্তী সময়ে আইয়ুব খান আহত গােলটেবিল বৈঠকে ও ইয়াহিয়া-ভুট্টোর সঙ্গে আলােচনায় বঙ্গবন্ধুর শাসনতান্ত্রিক পরামর্শদাতা হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীনতার পর দেশের প্রথম মন্ত্রিসভায় তিনি আইন ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন। এ সময় বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নে তিনি নেতৃত্ব দেন। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন।। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের তিনি একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী।