“মোগল সম্রাট শাহজাহান" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ শাহজাহান তাঁর রাজত্বকালে তাঁর পূর্বসূরিদের ন্যায় বেশ কিছু প্রাসাদ ও অট্টালিকা নির্মাণ করিয়েছিলেন। তিনি মােগল স্থাপত্যের মহান পৃষ্ঠপােষকদের অন্যতম ছিলেন। তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত সৌধ হলাে তাজমহল যা তার প্রিয়তমা পত্নী মুমতাজ মহলের স্মৃতিরক্ষার জন্য নির্মাণ করিয়েছিলেন। কথিত হয় যে, এই মহান সৌধের নকশা তার স্বর্গীয় ভাবনার ফসল যা তিনি স্বপ্নে লাভ করেছিলেন। তার গঠনশৈলী ও পরিকল্পনা তখনও পর্যন্ত ছিল মানব-কল্পনার অতীত। এর বিনির্মাণে তিনি পৃথিবীর সকল দেশের স্থাপত্য-কলা-বিশারদদের নিজের দেশে আহ্বান জানিয়েছিলেন। এই মহান সৌধ নির্মাণ সম্পন্ন করতে ২০ হাজার শ্রমিকের বাইশ বছর সময় লেগেছিল। এটি নির্মিত হয় শ্বেত-মর্মর দিয়ে। ... শাহেনশাহ শাহজাহানের মৃত্যুর পর আওরঙ্গজেব তাঁকে তাজমহলে মুমতাজের পাশেই দাফন করিয়েছিলেন। এদিকে শাহজাহান ছিলেন পান-দোষ মুক্ত, উন্নত চরিত্র, সাবলীল দৈহিক ও মানসিক শক্তির অধিকারী, ধার্মিক এবং দয়ালু। শুভ্র শান্ত হৃদয়, উন্নত মননশীলতার অধিকারী এক সুযােগ্য রাজপুত্র। মােগল রাজদরবারে তার যােগ্যতার ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েই গিয়েছিল। তাঁর সৎ-ভাইদের সঙ্গে তাঁর পিতার সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারের দ্বন্দ্বে তিনি নিজেকে সযত্নে সরিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু রাজদরবারে সবার অলক্ষে যেটা ঘটে যাচ্ছিল তা হলাে সাম্রাজ্যের ঘটনাপঞ্জির লেখকদের দ্বারা দীর্ঘকাল ধরে সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী রূপে তিনিই পরিগণিত হয়ে চলেছিলেন। ১৬০৭ ঈসায়ী সনে খুররমকে হিসারফিরােজার জায়গিরি অনুমােদন করে জাহাঙ্গীর প্রকারান্তরে তার শাহি পদমর্যাদা ও পরম্পরাগত উত্তরাধিকার স্বীকার করে নেন।