অভিনয় শিক্ষায় সংগীত ভারতের বৈশিষ্ট্য তার সুরে—সংগীত তার প্রাণ। তাই অতি পুরাকাল হতেই সে শব্দ-ব্রহ্মকে প্রকাশ করেছে—নব-নব সুরের ইন্দ্রজালে। ভাষা তার—সুরের ধারা—ভাব তার সংগীতে ভরা। তাই জগৎ যখন ছিল অর্ধ সভ্য বা অসভ্য—তখনই ভারতের পুণ্য ঋষিগণ ভাবের রঙে ভাষার বুকে গেঁথেছিলেন গানের পর গান—মুখরিত করেছিলেন ভারতের আকাশ-বাতাসকে। তাই পরবর্তী কালে যখন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বাংলার বুকে নাটকের অভিনয় পুনঃপ্রচলিত করলেন—গান হল তার কায়া আর ভাব হল তার প্রাণ! কারণ তিনি বুঝেছিলেন দর্শকদের প্রাণে রসকে ঘনীভূত করতে হলে চাই সুরের উন্মাদনা—আর সেই সুর এমন হওয়া চাই যাতে গায়ক ও শ্রোতা তন্ময় হয়ে যাবে। আত্ম-ভোলা গায়ক প্রাণের দরদ দিয়ে তার গান গাইবে—আর সেই সুরের অশ্রান্ত ধারায় স্নাত হয়ে শ্রোতা ভুলে যাবে তার অস্তিত্ব—তা সে সুর মিশ্র হোক অমিশ্র হোক— ভাঙা হোক গড়া হোক কিছু তাতে যায় আসে না, কেবল লক্ষ্য থাকবে গায়কের—নাটকের অগ্রগতির দিকে। তাই সেই অতীত কাল হতেই শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বাংলা ও বাঙালির নাটকের গানই হয়েছে প্রাণ। পাশ্চাত্যের অনুকরণ-প্রিয় এই বিংশ শতাব্দীর বাঙালি বহু আয়াসেও সংগীতকে তার নাটক থেকে বাদ দিতে পারেনি কারণ তার অস্থি-মজ্জা- ভাষা ও ভাব অণুপ্রাণিত সংগীতের লহরে-লহরে। নাটকের মধ্যে সংগীতের