সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘কেউ কথা রাখেনি’ এক স্বপ্নভঙ্গের কাহিনী শান্তনু চক্রবর্তী দুঃস্বপ্ন, দুর্দশা, দুর্মর বেদনা থেকে মুখ ফিরিয়ে কখনো প্রেমকে আঁকড়ে ধরে, আবার কখনো বা ভালোবেসে ছারখার করে—এইসব হৃদয়গুলো ব্যক্তিক হৃদয় । সর্বজনীনতার ভিড়ে এক-একটা ধ্রুব সত্যের মতো চিরদীপ্তমান। কবিতার দীর্ঘ পথ চলার মধ্যে কোনো কোনো কবি তাঁর সময়কালের অন্তরাত্মাকে উপলব্ধি করে নিজের রচনার বিষয়কে সাজিয়ে নেন। আবার কোনো কবি নিজের বেদনাকে প্রতিবাদের ভাষা করে নিয়ে সমাজ সংসারকে অপাংক্তেয় ভেবে এক ভিন্ন স্বভূমি তৈরি করেন কবিতার জন্য। চারের দশকের বাংলা কবিতার মেজাজ রাজনীতির ঘূর্ণাবর্তকে কেন্দ্র করেই মূলত আবর্তিত হয়েছে। এক-এক কবি, তাঁদের ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সমাজ সংসারে রাজনীতির ভালো-মন্দের তুল্যমূল্য বিচার করেছেন। যদিও সে যুগটা ছিল যূথবদ্ধতার যুগ। একসাথে প্রতিবাদের চূড়ান্ত এক ঘোষিত সংগ্রাম। সময়ের ধারাপাতে পাঁচের দশক এক আলাদা বাষ্পের সৃষ্টি করেছে। যে বাষ্প কোনো একক মাত্রার মধ্যে সীমায়িত নয়, ভিন্ন তাৎপর্যে, ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির মুন্সিয়ানায় বিন্যস্ত। সেই বিকশিত ভারমূর্তির অনন্য উদাহরণ—সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। প্রেমে-প্রতিবাদে, দুঃস্বপ্নের গোলকধাঁধায়, নীরার জন্য তৃষিত হৃদয়ের ব্যঞ্জনাময় ভাব-বিহ্বলতায় তাঁর কবিতার জগৎ সৃষ্টি হয়েছে।