খান চৌধুরী আমানতউল্লা আহমদ কোচ-কামতাপুর অঞ্চলের প্রাচীন ইতিহাস পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে কোচবিহারের ইতিহাস গ্রন্থটির প্রথম খণ্ড ১৩৪২ বঙ্গাব্দে প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর সেই মহতী প্রয়াসের ফলস্বরূপ আমরা কোচ-কামতার বিগত সাড়ে চারশো বছরের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে প্রথম জ্ঞাত হই। খান চৌধুরী আমানতউল্লা আহমদের পূর্বে কোচবিহার সংক্রান্ত প্রায় সকল রাজবংশাবলি ও ইতিহাসগ্রন্থই অংশত কল্পনাশ্রয়ী কিংবা জনশ্রুতিনির্ভর। ইতিহাস রচনার কোনো আধুনিক পদ্ধতিই সেগুলির ক্ষেত্রে অবলম্বন করা হয়নি। ফলত, কোচবিহারের ইতিহাসের প্রাচীনত্ব সম্পর্কে ঐতিহাসিকেরা কোনো স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। ১৩৪২ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত গ্রন্থটি এই অনিশ্চয়তার অবসান ঘটায়। মহারাজা বিশ্বসিংহের রাজত্বকাল থেকে মহারাজা হরেন্দ্রনারায়ণের পূর্ব পর্যন্ত রাজত্বকালের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ এখানে প্রদত্ত হয়। খান চৌধুরী তাঁর গ্রন্থের প্রস্তাবিত পরবর্তী খণ্ড সম্পূর্ণ করে যেতে পারেননি। তাঁর অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে এই গ্রন্থের সম্পাদক মহারাজা হরেন্দ্রনারায়ণ থেকে মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্রনারায়ণের রাজত্বকাল পর্যন্ত সাতজন মহারাজার কার্যকালের বিবরণ ‘দ্বিতীয় খণ্ড’-তে সংযোজিত করেছেন। দু-খণ্ডে বিভক্ত কোচবিহারের ইতিহাস পড়ে পাঠক একটি বৃহৎ জনপদের এতাবৎ অজ্ঞাত, অনালোচিত সাহিত্য, ধর্ম, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, সমাজ ও শাসনব্যবস্থার প্রামাণ্য কালানুক্রমিক পরিচয় পাবেন।