ভূমিকা গবেষণার মূল কথা সমস্যা ; সমস্যা আছে, তার সমাধানের তাগিদে বিশেষ পদ্ধতিতে চিন্তার নামই রিসার্চ, গবেষণা। এই বিশেষ পদ্ধতি সম্বন্ধে গবেষককে সচেতন করাই এই বইয়ের উদ্দেশ্য। গবেষণার মূল উদ্দেশ্য কী, গবেষণায় পর্যায়ক্রমে অগ্রসর হওয়া একান্ত জরুরি কি না, কীভাবে গবেষণাপত্র প্রস্তুত করতে হয়, গবেষক কী ধরনের আঙ্গিকগত অথবা প্রণালীগত নিয়মাবলি মেনে চলবেন—একমাত্র গবেষণা রীতিবিজ্ঞানই (Research Methodology) গবেষণা সংক্রান্ত এই সব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে পারে। গবেষণার কোনো বাঁধা-ধরা বিষয় নেই। ক্ষেত্র বিশেষে গবেষণার নিয়মনীতি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, তথ্য সংগ্রহ পদ্ধতি ও বিশ্লেষণ পদ্ধতিতেও প্রভেদ পার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু সাধারণত যে কোনো তত্ত্বমূলক (academic) গবেষণায় মূলরীতি প্রায় অভিন্ন । সাধারণ শিক্ষার্থী বা নবশিক্ষানবীশ গবেষকের জন্যই রীতি সম্পৰ্কীয় এই পথনির্দেশিকা । প্রসঙ্গক্রমে তত্ত্বের কথা এসেছে কিন্তু গবেষণাতত্ত্ব বিষয়ক সারগ্রন্থ এটি নয় ; গবেষণাকার্যে নিযুক্ত গবেষকের সুবিধার্থে লেখা এই বইয়ের প্রধান উদ্দেশ্য হল গবেষণার ব্যবহারিক ক্ষেত্রে পথনির্দেশ করা। এখানে গবেষণার বিভিন্ন পর্যায়, তথ্য বিশ্লেষণ, চিন্তাবিন্যাস ও তথ্য সংশ্লেষণের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে ; গবেষণা বিষয়ক সাধারণ সারগ্রন্থে এইসব বিষয়ে স্বচ্ছ নির্দেশের যথেষ্ট অভাব আছে। তাছাড়া গবেষণা সম্পর্কিত দুটি গুরত্বপূর্ণ বিষয়-গ্রন্থ-বিজ্ঞান ও পাঠ্যসম্পাদনা সম্পর্কে যথাক্রমে ৫ম ও ৬ষ্ঠ অধ্যায়ে স্বল্প পরিসরে আলোচনা করা হয়েছে। কেবলমাত্র প্রথাবদ্ধ শিক্ষার তত্ত্বমূলক গবেষকই নন, জিজ্ঞাসু সাধারণ পাঠক এবং প্রথাবহির্ভূত শিক্ষার গবেষকও এর দ্বারা সমান উপকৃত হবেন বলে আমার একান্ত বিশ্বাস ।