'বেঙ্গল রেজিমেন্টের যুদ্ধযাত্রাঃ ১৯৭১' বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা কথা সাইদুল ইসলাম অনেকদিন ধরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে কাজ করছেন। মুক্তিযুদ্ধকে তিনি দেখেন একটি দীর্ঘ রিলে রেসের মত, যার ফাইনাল ল্যাপটি শুরু হয়েছিল সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শুরু হবার সাথে সাথে। এই রেসের প্রতিটি প্রতিযোগীর প্রাণপন প্রচেষ্টার যোগফল আমাদের চুড়ান্ত বিজয়, আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের মানচিত্র। ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি সেনাদের অতর্কিত আক্রমণের প্রায় সাথে সাথেই জনতা যখন তার জবাব দিতে শুরু করে, একই সময়ে বাঙালি সৈনিকদের নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার প্রতিক্রিয়ায় নিকটস্থ বেঙ্গল রেজিমেন্ট ইউনিটের নেতৃত্ব মেনে পাকিস্তান সশস্ত্রবাহিনীর বাঙালি সদস্যরা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। সুস্পষ্ট রাজনৈতিক নির্দেশণা এবং পারষ্পারিক সমন্বয়হীন এই বিদ্রোহ মূলত: পাকিস্তানি আক্রমণ অথবা আক্রমণ পরিকল্পনার তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া হিসাবে সংঘটিত হওয়ায় পাঁচটি ইউনিটে যুদ্ধ শুরু হতে পাঁচদিন লেগে যায়। দেশের নানান এলাকায় বিচ্ছিন্ন ভাবে যুদ্ধে জড়িয়ে, ইপিআর, পুলিশ এবং সাধারণ মানুষের সমন্বয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে সংগঠিত বিভিন্ন দল, উপদল প্রাথমিক প্রতিরোধযুদ্ধে তাঁদের অর্জিত বিজয় সংহত করা অথবা পরাজয়ের প্রতিশোধ নেবার লক্ষে বেঙ্গল রেজিমেন্টের পতাকা তলে সমবেত হতে থাকে। সামরিক জান্তার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশব্যাপী জনযুদ্ধে জড়িয়ে পড়া এইসব দলছুট যোদ্ধার সাথে বেঙ্গল রেজিমেন্টের সম্মিলনে গঠিত হয় মুক্তিবাহিনী। সাইদুল ইসলামের লেখার সাথে সম্পৃক্ত করে ফেলেন, তারপর শুরু হয় পাঠকের সাথে তাঁর পথ পরিক্রমা। বেঙ্গল রেজিমেন্টের যুদ্ধ যাত্রাও তার ব্যাতিক্রম নয়। এটি মুক্তিযুদ্ধের সূচনা পর্বের উপাখ্যান। শৃঙ্খলা পরায়ন সেনাবাহিনীর স্বাধীনতার জন্যে সশন্ত্র বিদ্রোহের ডকু ফিকশন। মুক্তির জন্যে নিরস্ত্র শান্তিকামী জনতার সশন্ত্র হয়ে ওঠার কাহিনিী।