শ্রীশ্রী আনন্দময়ী মা কথামৃত ভূমিকা একসময়ে সুমেরু শিখরে ঋষিদের একটি সভা আহ্বান করা হয়। সভার আমন্ত্রণ পত্রের সঙ্গে একথাও প্রচার করা হয়, যে ঋষি ঐ সভায় অনুপস্থিত থাকবেন, তিনি সাতরাত্রির মধ্যে ব্রহ্মহত্যা পাপে হবেন লিপ্ত। ঘটনাচক্রে ঋষি বৈশম্পায়ন সেই সভায় উপস্থিত হতে পারলেন না। ঋষিবাক্য ব্যর্থ হলো না। এক অসতর্ক মুহূর্তে দৈববিড়ম্বনায় বৈশম্পায়ন ব্রহ্মহত্যা করে বসলেন। দুশ্চিন্তায় অসহিষ্ণু হলেন ঋষি। বিচলিত হলেন শিষ্যবৃন্দ । অকস্মাৎ প্রধানশিষ্য যাজ্ঞবল্ক্য গুরুদেবের সম্মুখে উপস্থিত হয়ে গর্বভরে বললেন, ‘ভগবন্, আপনি আপনার অতি অযোগ্য শিষ্যমণ্ডলীদ্বারা পরিবৃত হয়ে আছেন। আপনার আদেশ পেলে আমি একাই উগ্র তপস্যাবলে আপনার পাপের বিনাশসাধন করতে পারি।' যাজ্ঞবন্ধ্যের গর্বিত বচনে ক্রোধান্বিত হলেন ঋষি বৈশম্পায়ন। প্রত্যুত্তরে বললেন, ‘তুমি গর্বভরে তোমার সতীর্থদের বৃথা নিন্দা ও অপমান করছো। তুমি আমার শিষ্য থাকবার অযোগ্য। সুতরাং তোমাকে আমি যে বিদ্যাদান করেছি তা ফিরিয়ে দিয়ে এখনই আমার আশ্রম পরিত্যাগ করো।' শিষ্য যাজ্ঞবল্ক্য অভিমানভরে সেই মুহূর্তে গুরুপ্রদত্ত বিদ্যা উদ্গীরণ করলেন। উপস্থিত শিষ্যদের মধ্যে কয়েকজন তিত্তরীপক্ষীর রূপধারণ করে তা ভক্ষণ করলেন। রক্ষিত হলো বেদ-বিদ্যা। রচিত হলো তৈত্তিরীয় উপনিষৎ। ঈশোপনিষৎ। বৈদিক উপনিষৎ সমূহ প্রচারিত হলো লোকসমাজে । আমি ঋষি বৈশম্পায়ন শিষ্যবর্গের পদাঙ্ক অনুসরণ করে, ‘পরমযোগিনী আনন্দময়ী মা'র অমৃত উদ্গীরণ রক্ষা করবার মানসে এই গ্রন্থখানি রচনা করেছি।