‘আমার পরাণ যাহা চায় তুমি তাই তুমি তাই গো’ রবীন্দ্রনাথের এ গানটি যেমন শ্রুতি মধুর তেমনি শ্রোতাপ্রিয়। এ গানটির যে আবেদন বা আবেগ তা কজনার ভাগ্যে ঘটে? সঠিক মানুষটি খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। আমরা যাকে চাই তাকে পাই না। যাকে পাই তাকে চাই না। চাওয়া পাওয়ার এ ব্যবধানে জীবন হয়ে যায় কখনও অর্থহীন। দেহের মাঝে প্রাণ নিয়েও মনে হয় মৃত একটি লাশ। নায়না শাহরীন চৌধুরী একজন কণ্ঠশিল্পী ও গীতিকার। ফলে তার লেখায় বহুমুখি প্রতিভার ছাপ লক্ষণীয়। আমার পরাণ যাহা চায় নামের এই বইটিকে যদিও তিনি উপন্যাস হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চান না। কিন্তু তার লেখা এ স্বীকৃতি আদায় করে দিতে সক্ষম পাঠকের কাছ থেকে। তৌহিদ নামের এক পঁয়ত্রিশ বছরের যুবকের সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়ে উপন্যাসের কাহিনি আবর্তিত। অর্থী নামের কুড়ি পেরোনো তরুণীর সাথে সদ্য বিচ্ছেদের যন্ত্রণা পেরিয়ে অসম প্রেম তার জীবনে যে পরিবর্তনগুলো আনে সেগুলো এ উপন্যাসে উঠে এসেছে। অর্থী চলে যাবার পরে ইতালি যেতে মনস্থির করে তৌহিদ। যাত্রাপথে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে বদলে যায় তার জীবনের ছন্দ। জ্ঞান ফিরে পরিচয় হয় আরতির সাথে। ধর্ম, সমাজ, পরিবার আলাদা আরতির। তবু ভালোলাগা, ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়ে দুজন। ৬৪ পৃষ্ঠার এই উপন্যাসটির ২৩ টি ভাগ রয়েছে। ঘটনার চলমানতা ঠিক করে শুধু নাম্বার দেওয়া হয়েছে। ঘটনার বর্ণনা ও চরিত্রের বিন্যাসে এ উপন্যাসটি পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণে সফল হবে। মানুষের জীবনে অনেক ঘটনা থাকে। কারো সাথে কারো ঘটনা হুবহু মিলে না গেলেও কিছুটা মিলে যায়। আর এই কিছুটা মিলে যাওয়াই মানুষের সান্ত্বনা হিসেবে কাজ করে।
নায়না শাহরীন চৌধুরীর জন্ম ঢাকায় ২২ মে ১৯৮২। পড়াশোনা করেছেন লোক প্রশাসন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। লেখালেখির সূত্রপাত শৈশব থেকেই। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখালেখির পাশাপাশি প্রকাশিত হয়েছে আরও চারটি গ্রন্থ যার মধ্যে গল্প সঙ্কলন, কবিতা এবং উপন্যাস রয়েছে। লেখালেখি করছেন বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে নারীবাদ, নাগরিক সমস্যা এবং অন্যান্য সমসাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে। এছাড়া, সঙ্গীতশিল্পী এবং গীতিকবি হিসেবে কাজ করছেন বেতার, টেলিভিশন এবং ফিল্মে। বর্তমানে, জীবিকা নির্বাহে কাজ করছেন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি তেল বিপণন সংস্থায়।