বহু শতাব্দি ধরে ভূগােলের ইতিহাস ও দর্শন নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগের আগে পর্যন্ত প্রাকৃতিক ইতিহাস' নামে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা শুরু হলেও বিষয়ভিত্তিক বিশেষায়ন সম্ভব হয়নি। ধীরে ধীরে বিভিন্ন বিষয়ের আহরিত জ্ঞানের পরিমান বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে জ্ঞানের পৃথক পৃথক প্রণালীবদ্ধ শাখা গড়ে উঠতে থাকে। ফলশ্রুতিতে ‘ভূগােল’ নামেও একটি প্রণালীবদ্ধ শাখা, গড়ে উঠে। একথা সত্যি যে, বিভিন্ন প্রণালীবদ্ধ শাখাগুলাের মধ্যে অত্যন্ত নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান থাকার যেমন: প্রাণিভূগােলের সাথে প্রাণিবিদ্যা, মৃত্তিকা ভূগােলের সাথে মৃত্তিকাবিজ্ঞানকারণে জ্ঞান-বিজ্ঞানের এই সমস্ত শাখাগুলাের মধ্যে সুস্পষ্ট সীমানা নির্ধারন কঠিন হয়ে পরছে। তবে বিশেষ বিষয় পাঠের জন্য গড়ে উঠা বিশেষ বিশেষ শাখা-প্রশাখার গুরুত্বও কম নয় এবং এব্যাপারে ভূগােলবিদরাও সচেতন। “ভৌগােলিক চিন্তা ও ধারণা' শীর্ষক গ্রন্থটি ভূগােলের অতীত ইতিহাস ও দর্শন চিন্তার বহিঃপ্রকাশ মাত্র। ভূগােলে দর্শন নিয়ে এই চিন্তাভাবনা অপেক্ষাকৃত নতুন হলেও বিভিন্ন যুগের বিভিন্ন পন্ডিতবর্গ তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাভাবনা তুলে ধরার মাধ্যমে ভূগােলে নতুন নতুন দিকের উন্মােচন করেছেন। মূলত: সেসমস্ত পন্ডিতবর্গের বিশেষ করে ভুগােলবিদদের না জেনে বা তাদের চিন্তাধারার সাথে পরিচিত না হয়ে ভূগােলের জ্ঞানার্জন অনেকাংশেই সম্ভব হয় না। ভৌগােলিক চিন্তা ও ধারণা' নামক বক্ষমান গ্রন্থটি ভূগােলের দার্শনিকদের চিন্তাভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র।