প্রাসঙ্গিক কথা বর্তমানে আমাদের দেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মাত্র গুটিকতক মাশরুম চাষ করা হয়। আর এদের মধ্যে বােতামছাতু (Button mushroom) বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ব্যাপকভাবে উৎপাদন করা হয়। উত্তর ভারতে শীতকালেও মাশরুম উৎপাদন করা যায়। মাইসিলিয়াম বৃদ্ধির জন্য দিনের তাপ ২৩-২৬ সে, হওয়া চাই। আর মাইসিলিয়াম থেকে। ফ্রট বডি (Fruit body) তৈরি হতে এই তাপমাত্রা খুব অনুকূল। তবে এ কথা ঠিক যে, অতীতের চাষের পদ্ধতি তেমন উন্নত ছিলাে না বলে ফসল প্রাপ্তির সম্ভাবনা সম্বন্ধে পুরােপুরি নিশ্চিত হওয়া যেতাে না। কিন্তু এখনকার অতি উন্নত পদ্ধতি এই সমস্যা দূর করেছে। মাশরুম এক পুষ্টিকর ও সুস্বাদু খাদ্য, এ দেশের লােক স্মরণাতীত কাল থেকে মাশরুমকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে আসছে। তবে ওগুলাে জন্মাতাে প্রকৃতির কোলে। বর্তমানে বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের মতাে এ দেশেও সাদা বােতামছাতু যথেষ্ট পরিমাণে চাষ করা হচ্ছে। আর এর চাহিদাও ব্যাপক। আশার কথা হলাে, মাশরুম চাষ করা খুব সহজ। কিন্তু মাশরুমের জন্য যে কম্পােস্ট তৈরি করা হয় তাতে এক প্রকার ক্ষতিকারক ছত্রাক জন্মাতে পারে যা মাশরুম জন্মানাের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। আধুনিক উন্নত পদ্ধতি অবলম্বনে জীবাণুমুক্ত কম্পােস্ট ব্যবহার করে অতি মাত্রায় উৎপন্ন সুনিশ্চিত করা হয়েছে। সাধারণ পদ্ধতির চেয়ে এ পদ্ধতি সংক্ষিপ্ত এবং বাণিজ্যিক কারণে অপরিহার্য বলে বিবেচিত হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে যা করণীয় তা করা হয় ঘরের বাইরে। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজটি সারা হয় বিশেষভাবে তৈরি এক কক্ষে যার মধ্যে উত্তপ্ত জলীয় বাষ্প প্রবেশ করানাের সুব্যবস্থা থাকে। ওই উত্তপ্ত জলীয় বাষ্পের দ্বারা কম্পােস্টকে জীবাণুমুক্ত করা হয়। ঘরােয়া চাষের ক্ষেত্রে ওই ব্যয়বহুল পদ্ধতি পদ্ধতি অবলম্বন করা সম্ভব হয় না। কিন্তু সুনিশ্চিত ফলনের জন্য জীবাণুমুক্ত কম্পােস্ট ব্যবহার করার প্রয়ােজনীয়তা অপরিহার্য। আর এ উদ্দেশ্যে এ দেশে প্রথম ১৯৮২ সালে সােলানে UND প্রজেক্ট-এর অধীনে জীবাণুমুক্ত কম্পােস্ট তৈরি করে ঘরােয়া খামারিদের সরবরাহ করার ব্যবস্থা করা হয়। দেশে মাশরুমের জনপ্রিয়তা যতােই বাড়বে ততােই দেশের সর্বত্র চাষীদের জন্য নানা ধরনের সুযােগ-সুবিধা সম্প্রসারিত হবে যা আজ দেশের কয়েকটি বিশেষ অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ আছে। উল্লিখিত সুযােগ-সুবিধার সম্প্রসারণ দেশব্যাপী মাশরুম চাষীর স্বার্থে যে অত্যন্ত জরুরি তাতে কোনাে সন্দেহ নেই। প্রয়ােজনের তাগিদে বইটি দ্রুত করা হলাে। বইটির অলঙ্করণের কাজে মাশরুম চাষের একটি ছবি দিয়ে সাহায্য করেছে পিনাকল মিডিয়া। এ জন্য তার কাছে আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। এটি বহুল পঠিত হবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি।