ভূমিকা রত্নপ্রসবিনী ভারতমাতা। কত শত রত্নসার মহাযোগিপুরুষ এই ভারতভূমিতে জন্মগ্রহণ করিয়া মাতৃভূমিকে পবিত্র করিয়াছেন, লক্ষ লক্ষ মানুষকে সত্যানুসন্ধানের পথ দেখাইয়া ধন্য করিয়াছেন। সেই সকল মহাত্মাদের জীবন কথা আজও কান পাতিলে শুনা যায় । তাঁহাদের মহামূল্যবান্ জীবন চরিত মাতৃভূমির সাহিত্য ও জ্ঞান ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করিয়াছে। মহাত্মাগণ অতীতেও ছিলেন, বর্তমানেও আছেন, আগামী দিনেও থাকিবেন। যখন সমাজ জীবন যেমন ভাবে চলে, মহাত্মাগণও সেইভাবে মানুষকে আলোকের পথ দেখান। তেমনি ভাবে যুগোপযোগী পথ দেখাইতে আসিয়াছিলেন ভারতমাতার আর এক কৃতী সন্তান যোগিরাজ মহাত্মা শ্যামাচরণ লাহিড়ী মহাশয়। বহু মহাপুরুষের জীবনগাথা রচিত হওয়া সত্ত্বেও এই মহাত্মার জীবনী রচনার প্রয়োজন আছে কি? এই মহাপুরুষ সাধারণ মানবের মত অনাড়ম্বর গৃহী জীবন যাপন করিয়া, অর্থাৎ পূর্ণ গৃহী বলিতে যাহা কিছু বোঝায় তেমন জীবন যাপন করিয়া, গৃহীর সকল কর্তব্য পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পালন পূর্ব্বক অধ্যাত্ম জীবনের সর্ব্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করিয়া এমন এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মানব সমাজের কাছে রাখিয়াছেন যেজন্য মানব সমাজ তাঁহার নিকট চিরকৃতজ্ঞ ও ঋণী। ইতিপূর্ব্বে অনেকেই এই মহাত্মার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জীবনী-গ্রন্থ রচনা করিয়াছেন সত্য, কিন্তু কেহই এ পৰ্য্যন্ত তাঁহার পূর্ণাঙ্গ জীবন-চরিত রচনা করেন নাই। তাই এই মহান্ গৃহিযোগীর অন্যতম পৌত্র পূজ্যপাদ শ্রীসত্যচরণ লাহিড়ী মহাশয়ের আদেশে এই মহাপুরুষের জীবন- চরিত রচনায় সাহসী হইয়াছি। কিন্তু তিনি বারংবার সাবধান করিয়া দিয়াছেন, যেন এই জীবন চরিতে সঠিক তথ্য ও তত্ত্ব সকল সন্নিবেশিত হয়; কদাচ যেন ভুল তথ্য বা তত্ত্ব এবং লেখকের কল্পনাপ্রসূত অমূলক কাহিনী না থাকে, যাহা পূৰ্ব্বে অনেক গ্রন্থেই দেখা গিয়াছে।