নাজমুস সাঈদ একজন তরুণ উদীয়মান কথাসাহিত্যিক। তারুণ্যের যে সম্ভবনা তার মধ্যে তা প্রতীয়মান। আর এটা বুঝতে হলে তার ‘রংধনু’ উপন্যাসটির পাঠ নেয়া যেতে পারে। বারো পর্বে বিভক্ত ৯৬ পৃষ্ঠার এই উপন্যাসটি একটি পারিবারিক জীবনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। পরিবারে মা বাবা বোন দাদি চাচা মিলে যৌথ জীবনযাপন। রজত এ পরিবারের ছোট ছেলে। বড়দি, মেজদি আর মালা তার বোন। বোনদের সাথে শৈশব, কৈশোরে নানা খুনসুঁটি আর আনন্দের মধ্য দিয়ে রজতের জীবন এগিয়ে চলে। রজতের বাবা ফেল করা ইঞ্জিনিয়ার। বিলেতে পড়তে গিয়েছিলেন। পড়া হয়নি। বিএসসি শেষ না করেই দেশে ফিরেছেন। রজতের চাচার সাথে রজতের সম্পর্ক ছিল খুবই ভালো। রজতের এ চাচাটি ছিলেন অন্যরকম। কবিতা লিখতেন। কিন্তু একদিন তাকে মৃত হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আর তার মৃত্যুর পেছনে রজতের বাবার ভূমিকা রয়েছে। উপন্যাসে ঘটনার যে উত্থান-পতন, রহস্য, টানাপড়েন থাকা দরকার তা সবকিছুই উপস্থিত রয়েছে নাজমুস সাঈদের লেখায়। উপন্যাসের শুরুতেই তার জেলবাসের বর্ননা ও কথপোকথন দিয়ে শুরু হয়েছে। পাঠকের মনে একধরণের প্রশ্ন তৈরি করা ও আকর্ষণ করার মতো লেখা লিখতে পারা প্রশংসনীয় বটে। বইটির নামকরণে একটা সূত্র পাওয়া যায় বারো পর্বে- ‘জীবনটা ঠিক যেন এক রংধনু মনে হলো। অনেক রং তাতে। প্রতিটি রং নিয়ে খেলা করি। কখনো রাগে লাল হই। কখনো লজ্জায়। বিষাদে হই নীল। আনন্দে চোখ-মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে যখন, তখন আমরা কমলা রঙের খেলা খেলি। একে একে সাতটি রং বয়ে যায় জীবনে। শেষের দিকে জীবনের রং হয় সাদা।’