"প্যারাসাইকোলজি- স্বপ্নস্বর্গ" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: স্বপ্নস্বর্গ। অজানা জগতের অজানা এক স্বর্গ। সেখানে কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায় বসে আছে নীরব। পাশে শবনম। অপূর্ব সুন্দর শবনম, ভালােবাসার শবনম, ভালােলাগার শবনম। শবনমকে ছাড়া জীবনকে ভাবতে পারে না নীরব। কেনই বা পারবে? শবনমই তাকে সুস্থ করে তুলেছে, তাকে নতুন জীবন দিয়েছে, বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছে। তাইতাে তার চিন্তা-চেতনা, আবেগ ভালোবাসায় শুধুই শবনম। কিন্ত একি! আজ পৃথিবীর শবনম আর স্বর্গের শবনমের মধ্যে এত পার্থক্য কেন? মনে হচ্ছে অনেক অনেক কষ্ট শবনমের মনে? কী হয়েছে তার? প্রশ্ন করে জানতে চাইলে শবনম জানায়, স্বপ্নস্বর্গে আসতে তার বড়াে কষ্ট হয়, কারণ সে জীবিত। শুনে নীরব আশ্বস্ত হয়, এরকমই তাে চায় সে। শবনম বারবার স্বপ্নস্বর্গে আসুক। কিন্তু কীভাবে আসবে? আসতে হলে তাকে মৃত্যুবরণ করতে হবে। কিন্তু শবনম আত্মহত্যা করতে চায়। তাহলে উপায়? একমাত্র উপায় তাকে হত্যা করা। এদিকে স্বপ্নস্বর্গের সন্ধানে উঠেপড়ে লেগেছেন ডাক্তার তরফদার। কিন্তু স্বপ্নস্বর্গের সন্ধান তিনি পেলেন না। যা পেলেন, তা খুব ভয়ংকর। নীরবের বিরুদ্ধে তার আগের প্রেমিকা ফারিয়াকে হত্যার অভিযােগ রয়েছে। এখন নতুন পরিকল্পনা করছে নীরব। নিষ্ঠুর আর নির্মমভাবে হত্যা করবে শবনমকে। বারবার শবনমকে সতর্ক করে দিলেন ডাক্তার তরফদার। কিন্তু শবনম বিশ্বাস করল না ডাক্তার তরফদারের। সতর্কবাণী, কারণ ততক্ষণে নীরবকে নিয়ে সে তার স্বপ্নের জাল বুনে ফেলেছে, নীরবই তার জীবনের সকল সুখ, শান্তি আর ভালােবাসা। এই নীরবকে সে কীভাবে অবিশ্বাস করবে? নীরব কি সত্যি শবনমকে স্বপ্নস্বর্গে নিয়ে যেতে পেরেছিল? নাকি করুণ পরিণতি বরণ করতে হয়েছিল মমতা আর ভালােবাসায় ভরা সবার প্রিয় শবনমকে?
লেখক মোশতাক আহমেদ এর জন্ম ১৯৭৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ফরিদপুর জেলায়। পেশায় একজন চাকুরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও লেখালেখির প্রতি তাঁর আগ্রহ প্রচুর। এ পর্যন্ত সায়েন্স ফিকশন নিয়েই সবচেয়ে বেশি লিখেছেন। বাংলা সায়েন্স ফিকশন জগতে তার পোক্ত একটি অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও মোশতাক আহমেদ এর বই সমূহ ভৌতিক, প্যারাসাইকোলজি, মুক্তিযুদ্ধ, কিশোর ক্ল্যাসিক, ভ্রমণ ইত্যাদি জঁনরাতে বিভক্ত। যেকোনো একটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতেই পছন্দ করেন। মোশতাক আহমেদ এর বই সমগ্র সংখ্যায় পঞ্চাশ পেরিয়েছে। তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই ছিল ‘জকি’। এটি একটি জীবনধর্মী উপন্যাস। ২০০৫ সালে এটি প্রকাশিত হয়। মোশতাক আহমেদ পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথমে ফার্মেসি বিভাগে, পরে আইবিএতে। পরবর্তী সময়ে ইংল্যান্ডের লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপরাধবিজ্ঞান থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। পড়াশোনার খাতিরেই হোক বা কর্মজীবনের তাগিদেই হোক, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অনেক ভ্রমণ করেছেন। সেসব ভ্রমণকাহিনীর আশ্রয়ে তাই ক্রমেই সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর লেখা ভ্রমণকাহিনীগুলোও। তাঁর সৃজনশীল কর্মকাণ্ড শুধু লেখালেখিতেই গণ্ডিবদ্ধ নয়। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাজারবাগের পুলিশ ও পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর মধ্যে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সে ঘটনার ওপর ভিত্তি করে মোশতাক আহমেদ ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এটি ২০১৩ সালের মার্চ মাসে মুক্তি পায়। তাঁর পুরস্কারের ঝুলিতে এ পর্যন্ত রয়েছে ২০১৩ সালের কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের ছোটদের মেলা সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের কৃষ্ণকলি সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৫ সালের সিটি আনন্দ আলো পুরস্কার এবং সর্বশেষ সংযুক্তি হিসেবে সায়েন্স ফিকশন বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৭।