"ইমোশনাল মার্কেটিং" বইয়ের ফ্ল্যাপের অংশ থেকে নেয়া: ভারতের প্রথম স্বাধীনতাযুদ্ধ, সিপাহি বিদ্রোহের কথা জানেন তাে? ব্রিটিশরা ভারতবর্ষের মানুষের ওপর শত বছর ধরে শাসন-শােষণ-জুলুম চালিয়ে গেলেও তার বিরুদ্ধে তেমন কোনাে। প্রতিবাদ-প্রতিরােধ, বিক্ষোভ, আন্দোলন দেখা যায়নি। কিন্তু ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম মহা বিদ্রোহটি সংঘটিত হয় ১৮৫৭ সালে–সৈনিকদের রাইফেলের টোটায় শূকরের চর্বির থাকার খবরে! সেটিই শেষ পর্যন্ত ভারতের প্রথম স্বাধীনতাযুদ্ধে পরিণত হয়।মানবেতিহাসে এমন অনেক বড় বড় ঘটনা ঘটেছে। যেখানে আবেগের স্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মানুষের অনেক উদ্যোগ-উদ্যম-কর্মতৎপরতার মূলে যুক্তি নয় আবেগই প্রধান নিয়ামক। আবেগ নামক জিনিসটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশের একটি কোম্পানি প্যাকেটের গায়ে। ‘১০০ ভাগ হালাল সাবান’ লিখে বাজারের বাঘা বাঘা সব বহুজাতিক কোম্পানির সাবানকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে বাজার দখল করেছিল। হালাল সাবানের এই সাফল্যের বিষয়টি বৈশ্বিকভাবে এতটাই স্বীকৃতি লাভ করে যে, এখনাে ইউরােপ-আমেরিকাসহ পৃথিবীর। বিভিন্ন দেশের খাবারের দোকানগুলােতে হালাল মিট, হালাল শপ ইত্যাদি ব্যানার, সাইনবাের্ড লাগানাে হয়। যেকোনাে প্রােডাক্টের ক্ষেত্রে আবেগটাকে ব্যবহার করে কাস্টমারের সঙ্গে একটা স্থায়ী সম্পর্ক তৈরি করতে হবে; কাস্টমারকে জয় করে নিতে হবে, নিজের করে নিতে হবে; যাতে কাস্টমার আজীবন আপনার হয়ে থাকে। এই যে নিজের করে নেওয়ার এবং আজীবন আপনার হয়ে থাকার যেসব উপায় ইমােশনাল মার্কেটিং সেগুলােরই অন্যতম। এ বইতে ইমােশনাল। মার্কেটিংকে নানাভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সফলতার গল্পের সাথে যে ব্যক্তির নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তিনি মুনির হাসান। তিনি একইসাথে একজন বিজ্ঞানী, লেখক, ব্লগার ও উদ্যোক্তা, যিনি তারুণ্য ও উদ্যোক্তা এই দুইয়ের মেলবন্ধনে বেকারত্বের বাঁধা ডিঙোতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য উৎসাহ জাগানিয়া প্লাটফর্ম ‘চাকরি খুঁজবো না, চাকরি দেবো’ এর সাড়া জাগানো পথচলা ও সাফল্যের পেছনেও রয়েছে এই মানুষটিরই হাত। মুনির হাসানের আরেকটি পরিচয় হলো- তিনি বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (BdOSN) এর সহকারী প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে মুনির হাসান দৈনিক প্রথম আলোর যুব কর্মসূচী সমন্বয়কের কাজে নিয়োজিত আছেন। মুনির হাসানের জন্ম ১৯৬৬ সালের ২৯ জুলাই বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। সেখানেই সেন্ট মেরিজ, মুসলিম হাই স্কুল ও মুসলিম এডুকেশন সোসাইটিতে শেষ করেন হাই স্কুলের পাঠ। বাকি শিক্ষাজীবন জুড়ে আছে চট্টগ্রাম কলেজ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে অবদান ও সম্পৃক্ততার জন্য বন্ধু মহলে ‘ম্যাথ মুনির’ নামে পরিচিত হলেও বুয়েটে তাঁর পড়ার বিষয় ছিলো ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং। দৈনিক সংবাদের সাপ্তাহিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ফিচার পাতায় লেখালেখি করতে গিয়ে সাহচর্য পেয়েছেন আ. মু. জহুরুল হক, আবদুল্লাহ আল-মুতী, শরফুদ্দিন কিংবা এ আর খানের মতো বিজ্ঞান লেখক ও বিজ্ঞান কর্মীদের। তাঁদের অনুপ্রেরণায়ই বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার কাজে আরও উদ্যমী হয়েছিলেন। বিভিন্ন সময়ে ভোরের কাগজ ও প্রথম আলোর বিজ্ঞান বিষয়ক ফিচার পাতারও করেছেন সম্পাদনা। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে ২০০৩ সালে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের সাহচর্যে গড়ে তোলেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। বর্তমানে সেই সফল কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন মুনির হাসান। তাঁর অসাধারণ সব কাজের সাথে তাল মিলিয়ে, অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সময়ে সময়ে বেশ কিছু বইও লিখেছেন মুনির হাসান। মুনির হাসান এর বই সমগ্র এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- শরবতে বাজিমাত, গ্রোথ হ্যাকিং মার্কেটিং, গল্পে গল্পে ধাঁধা, অঙ্কের ধাঁধা ধাঁধায় অঙ্ক ইত্যাদি। মুনির হাসান এর বই সমূহ এর মধ্যে লেখকের বুয়েটে জীবন নিয়ে লেখা আত্মজৈবনিক বই ‘পড়ো পড়ো পড়ো’ পেয়েছে অসম্ভব পাঠকপ্রিয়তা। তাঁর জীবনেরই মতো মুনির হাসানের বই তাঁর পাঠকদের উদ্দীপিত করে নিজের পছন্দে নিজের জীবন বেছে নিতে ও গড়ে তুলতে।