“মুঠোফোনে সাংবাদিকতা" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ প্রযুক্তিগত ব্যাপক উদ্ভাবনের ফলে গত দশ বছরে সাংবাদিকতায় একটি বড় ধরণের পরিবর্তন এসেছে। এই প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মধ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং ওয়াইফাইসহ স্মার্টফোনের উত্থান সাংবাদিকতাকে গভীরভাবে পরিবর্তন করেছে এবং তা ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে। কেবল সংবাদ দেখার জন্য নয়, সংবাদ। তৈরিতেও স্মার্টফোন অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সাংবাদিকতা করার জন্য মােবাইল সাংবাদিকতা এক অভিনব ও চৌকস উপায়। একটি স্মার্টফোন তাৎক্ষণিকভাবে যে কোন স্থান থেকে যে কোন সংবাদ কাভার করার ক্ষমতা এনে দিয়েছে। এর ফলে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ ও বাধা অতিক্রম করা সম্ভব। হচ্ছে। দুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যুদ্ধবিগ্রহ- ইত্যাদি। কাভার করার ক্ষেত্রে ভারী ও ব্যয়বহুল সরঞ্জাম ও লােকবলের প্রয়ােজন দেখা দেয়। এবং তা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। মােবাইল সাংবাদিকতা হল ক্রমাগত দক্ষতা তৈরির এবং সাংবাদিকতা সংশ্লিষ্ট প্রচলিত সরঞ্জামের বাইরে বিকল্প অনুসন্ধান করার আগ্রহ। এক্ষেত্রে সম্পাদক এবং ব্যবস্থাপকদের সচেতন হওয়া উচিত এবং মােবাইল সাংবাদিকতার সম্ভাব্যতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে যাতে তারা তাদের টিমকে সৃজনশীল চর্চায় সমর্থন দিতে পারে। আমরা উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন মােবাইল সাংবাদিকদের দেখি। যারা তাদের স্মার্টফোনের সঙ্গে হালনাগাদ যন্ত্রপাতি এবং অ্যাপস ব্যবহার করেন। এসব সাংবাদিকরা সাংবাদিকতাকে একটা পেশাদার পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। বর্তমানে সংবাদ সংস্থাগুলাের মােবাইল সাংবাদিকতায় বিভিন্ন ধরণের সুযােগ-সুবিধা অফার করে। এসব সুবিধা কেবল তখনই কাজে আসবে যখন সাংবাদিকদেরকে মােবাইলে অভ্যস্ত হওয়ার জন্য। ভালােভাবে প্রশিক্ষিত করা যাবে। মােবাইল। সাংবাদিকতার সফলতার চাবি হলাে প্রশিক্ষণ । সাংবাদিকদেরকে তাদের প্রথাগত ভূমিকা বিস্তৃত করতে হবে। মাঠে সংবাদ প্রােডাকশনের পুরাে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দক্ষতা মােবাইল সাংবাদিকদের থাকতে হবে। সংবাদ সগ্রহ থেকে প্রকাশ এবং সম্প্রচার পর্যন্ত সেই দক্ষতার প্রমাণ রাখতে হবে।
দেশে পরিবেশ, প্রকৃতি ও পাহাড় নিয়ে সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎ ধরা হয় হোসেন সোহেলকে। কাজ করেছেন এটিএন নিউজ, দেশ টিভি, একাত্তর টিভিসহ বিবিসির সঙ্গে। বলা হয়, তাঁর হাত ধরেই দেশের টেলিভিশন সাংবাদিকতায় প্রাণ—প্রকৃতি বিষয়ক স্বতন্ত্র বিট যুক্ত হয়েছে। সুন্দরবনের বাঘ নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের জন্য ২০১২ সালে পেয়েছেন টিআইবির সেরা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার পদক। এছাড়াও বিভিন্ন সময় ভূষিত হয়েছেন নানান সম্মানে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে এটুআই প্রকল্পের মাধ্যমে হোসেন সোহেল ‘হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া’ কোর্সের জন্য র্দীঘদিন ভিয়েতনামে ছিলেন। নানান কাজে ঘুরেছেন এশিয়ার আরও দেশে। বাংলাদেশের মোবাইল জার্নালিজম নিয়ে তিনি বিশেষ গবেষণা করেছেন। এ বিষয়ে ‘মুঠোফোনে সাংবাদিকতা’ নামে তাঁর একটি বই তরুণ সাংবাদিকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ২০২৩ সালে প্রাতিষ্ঠানিক সাংবাদিকতায় ইতি টেনে হোসেন সোহেল শুরু করেছেন মুক্ত সাংবাদিকতা। বর্তমানে তিনি পার্বত্য জেলার পাহাড়ে পরিবেশ প্রতিবেশের ট্রান্সফরমেশন ও ট্রানজিশন নিয়ে অডিও ভিডিও ডিজিটাল আর্কাইভ এবং লিখিত গবেষণায় নিবিড়ভাবে কাজ করে চলেছেন। দায়িত্ব পালন করছেন ‘ওয়াইল্ড পোস্ট’ ও ‘ওয়াইল্ড ওয়াচ বাংলাদেশ’ নামে দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে। এছাড়া স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘তাজকেরা কেয়ার ভিলেজ’—এর প্রধান পরামর্শক হিসেবে রয়েছেন। পাহাড়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীগুলোর জীবনমান উন্নয়নে সোশ্যাল মিডিয়াতে তাঁর গবেষণার ভিডিওগুলো বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমাদৃত।