"মাও সে-তুঙ এর দেশে" বইটির শেষের ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ১৯৬৩ সালে তৃতীয়বারের মতাে চীন সফর করেন সাত সপ্তাহের জন্য। মূলত এই সফরের ওপর ভিত্তি করেই বর্তমান গ্রন্থটি লিখিত। গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৬৮ সালে। এত দীর্ঘ সময় পরে আবার তা গ্রন্থ আকারে প্রকাশিত হলাে। বিপ্লবের চৌদ্দ বছরের মাথায় চীনে যে মহারূপান্তর ঘটছিল তাকে মওলানা ভাসানী যেভাবে দেখেছেন, তাঁর ভাষায়, ‘চীন' শুধু মাত্র একটা দেশ নয়। চীন মহাদেশ। বাহাত্তর কোটি মানুষের একশ’ চুয়াল্লিশ কোটি কর্মঠ হাত এক অসাধ্য সাধন করেছে। তাদের বাহুর সঞ্চালন, সমাজতান্ত্রিক চেতনায় সমৃদ্ধ মনন দুনিয়ার বুক থেকে মানুষের মহৎ মর্যাদার পক্ষে কলঙ্ককর সকল অচলায়তনকে মুছে ফেলার অঙ্গীকারে দৃপ্ত। আফিমের খােয়াবীতে নিষ্প্রভ চোখে আজ অতন্দ্র প্রহরার দৃষ্টি। নেশায় নির্বীর্য বাহু আজ দুরূহতম অস্ত্র এবং জটিলতম যন্ত্র নির্মাণে ব্যস্ত। এই পর্যবেক্ষণ থেকে একদিকে যেমন মওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক চিন্তাকে বােঝা যায় তাঁর স্বমহীমায়, অন্যদিকে বর্তমান চীনের গতি-প্রকৃতির সাথে মিল-অমিলটাও পাঠক মিলিয়ে নিতে পারেন সহজেই। সে দিক থেকে এই গ্রন্থের ঐতিহাসিক তাৎপর্য ও প্রাসঙ্গিকতা অপরিসীম। রাজনৈতিক কর্মীদের জন্য তাে বটেই, সমাজ রূপান্তরের পাঠে। আগ্রহী সকলেরই এই গ্রন্থটি অবশ্যপাঠ্য।