‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সকল শিশুরই অন্তরে’ শৈশব, কৈশর, যৌবন আর বার্ধক্যের বলয়ে মানুষের জীবন। বয়সের সাথে সাথে পরিবর্তন ঘটে মানুষের মানসিক অবস্থার। তবে কেউ শৈশব, কৈশরকে ভুলে যেতে পারে না। স্মৃতির পাতায় অমলিন হয়ে থাকে জীবনের এ সোনালি অধ্যায়। ‘বুবাই’ ফারহানা আহমেদ এর শিশু-কিশোরদের নিয়ে একটি মনোজত্বাত্তিক বই। বুবাই আসলে আর কেউ নয়, আমি কিংবা আপনি কিংবা আমরাই। আমাদের প্রতিজনের মাঝে বাস করে ছোট্ট মনের একেকটি শিশুমনই একেকটি বুবাই। এই শিশুমনের পটভূমিকায় গল্পগুলোকে একত্রে সাজিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ গল্প সংকলন ‘বুবাই’ কাহিনি। বুবাইয়ের অনেক কৌতুহল, অনেক প্রশ্ন। আর এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজে তার মায়ের কাছে তার ম্যাজেশিয়ান আঙ্কেলের কাছে। নানা ঘটনার প্রতি রয়েছে তার বিশেষ এক ধরনের সূক্ষ্ণ অনুভূতি ও ভিন্নচোখে ভেবে দেখার মতো চিন্তাশৈলী। হোক তা যুক্তিগত অথবা অযৌক্তিক। বুবাইকে ঘিরে ১৯টি গল্প সূচিবদ্ধ করা হয়েছে এ বইটিতে। লেখক ফারহানা আহমেদ খুব স্মার্টভাবে গল্পগুলো লিখেছেন। তার লেখার স্টাইল পাঠককে আকর্ষণ করবে। লেখাকে প্রাণবন্ত করে তোলার মতো দক্ষতা তার লেখার মধ্যে দেখা যায়। নানা সংলাপ ও বিচার বিশ্লেষণে তার মেধা ও মননের পরিচয় মেলে। পাঠক হিসেবে যারা এ বই পাঠ করবেন তারা পাবেন জীবনের নতুন বোধের সন্ধান। ফারহানা আহমেদ জন্ম ও কর্মসূত্রে ঢাকার বাসিন্দা হলেও পৈত্রিক ভিটা ঝিনাইদহে। এটি তার সংকলিত গল্প আকারে প্রকাশিত প্রথম বই। প্রচারবিমুখ এবং লেখা প্রকাশে একধরনের ভীতি তাকে অনাবিষ্কৃত রেখেছে অনেক দিন। সে জায়গা থেকে সরে এসে আরো বেশি সক্রিয় হলে তার হাত থেকে আরও ভালো ভালো গল্প আমরা পেতে পারি।
ফারহানা আহমেদ জন্ম: ১৪ জানুয়ারি, ১৯৭৮। পেশায় ব্যাংকার। জন্ম ও কর্মসূত্রে ঢাকার বাসিন্দা হলেও পৈত্রিক আদিবাস ঝিনাইদহে। স্কুল ও কলেজ-জীবনের প্রাথমিক অধ্যায়ও এই জেলায়। নিজ শহরের প্রতি রয়েছে তার তুমুল টান। অনিয়মিত লেখালেখির শুরু স্কুল-জীবনের বাৎসরিক ম্যাগাজিন থেকে। প্রচারবিমুখ এবং লেখা প্রকাশে একধরনের ভীতি তাকে অনাবিষ্কৃত রেখেছে অনেকগুলি দিন ও বছর।
প্রাতিষ্ঠানিক কাজের চাপ আর সংসারের ব্যস্ততাকে সামলে যে অবসর সময়টুকু পান, সে সময়ে তিনি ঘুরে বেড়ান সাহিত্যের খোলা আলো-ঝলমল বারান্দায়। সব ধরনের লেখার প্রতি রয়েছে আগ্রহ। আর আছে উদ্দীপনা শিশুতোষ সাহিত্যের প্রতি। কবিতা ও ছোটগল্প দিয়েই তার হাতে-খড়ি লেখালেখিতে। সংকলিত গল্প আকারে প্রকাশিত প্রথম বই ‘বুবাই’।