শিশুরা মূলত ছড়ায় ছড়ায় ভাষা শেখে। ছড়া দিয়ে অনেক কথা সহজেই বলা যায়। বোঝানোও সহজ হয় ছড়া দিয়ে। আবুল খায়েরের ‘ছড়ার বনে বাঘের সনে’ একটি অনিন্দ্য সুন্দর ছড়ার বই। আবুল খায়ের শিশুমনের কল্পনা, ভাব, স্বপ্নকে খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে এ ছড়াগুলো লিখেছেন। সময়ের সাথে সাথে বদলে যাওয়া প্রাণ প্রকৃতি ও মানুষের অনুভূতির সাথে যাতে টিকে থাকতে পারে এ ছড়াগুলো সে চেষ্টাই তিনি করেছেন এ বইয়ের ভেতরে। প্রত্যেকেরই একটি শৈশব থাকে। এই শৈশব কারো হয় গ্রামীণ, কারো হয় শহুরে। গ্রামীণ শৈশবের যে আনন্দ তা কিন্তু শহুরে জীবনে নেই। ‘আমার সোনার গাঁয়’ ছড়ায় সেই গ্রামকে আমার খুঁজে পাই- বসন্ত বাতাসে ওই সুরের মূর্ছনায় সুরের রাজ্যে মন উদাসী দেখবে চলো গাঁয়। কলসী নিয়ে গাঁয়ের মেয়ে নদীর ক‚লে যায় পানি নিয়ে বাসায় ফিরে খালি দুটি পায়। পাখপাখালি বনবাদাড়ে সুরের আবেশে মনটা আমার হারিয়ে যায় তেপান্তরের দেশে। ২২ টি ছড়া রয়েছে এ বইটিতে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রয়েছে ছড়া। বাংলা ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়েও রয়েছে খুবই ঋদ্ধ ছড়া। এসব ছড়ার মধ্যে যেমন ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে তেমনি রয়েছে এর ছন্দের কারুকাজ। ছন্দে ছন্দে সহজেই শিশু-কিশোরেরা জেনে যেতে পারবে আমাদের গৌরবের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু নামের একটি ছড়ায় আবুল খায়ের লিখেছেনÑ জন্মভ‚মির জন্য তোমার মতো নেতা পেয়ে আমরাও তাই ধন্য। বীর জনতা সব তোমায় ভালোবেসে তাই করে কলরব। তুমি আছো ওই লাল-সবুজের পতাকায় দ্যাখো হই-চই। ঝকঝকে চার রঙের অসম্ভব সুন্দর ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে এই ছড়ার বইটিকে। বৃষ্টি, ফুল, পাখি, বাঘ, নদী, বন কি নেই এই ছড়াগুলোর মধ্যে। এক কথায় বলতে গেলে বলা যায় এ বইটি শিশুমনের কল্পনার ছড়ার লাইব্রেরি।