ভূমিকা: ‘কীভাবে গড়বেন ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার’ বইটি লেখার উদ্দেশ্য একটাই—যাঁরা এই পেশায় নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়তে চান, তাদের পাশে দাঁড়ানো। আমাদের দেশের লাখ লাখ তরুণ–তরুণী এখনো বেকার। প্রথম আলোতে আমি যখনই একেকজন সফল ফ্রিল্যান্সারের গল্প লিখি—হাজারো ফোন, ইমেইল, ইনবক্সে ম্যাসেজ আসা শুরু হয়। সবার মূল কথা একটাই—ভাই আমিও ফ্রিল্যান্সার হব। কীভাবে কী করব? আমি কী পারবো? কোথায় যাব? সঠিক গাইড লাইন কোথায় পেতে পারি? এমন প্রশ্নের সম্মূখিন হতে হয় সব সময়। ছোট্ট একটা ঘটনার কথা বলি। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস। মিরপুরের মেয়ে সালমা (ছদ্মনাম)। তিনি পত্রিকায় একজন সফল নারী ফ্রিল্যান্সারের কথা পড়েছেন।পড়ে তিনিও এই পেশার প্রতি আগ্রহী হয়েছেন। সালমার বাবা একজন মুদি দোকানদার। বাবাকে বললে হয়তো বকা দিবে। সেজন্য নিজেই খুঁজতে শুরু করেন, কোথায় শেখা যায়। মিরপুরের ব্যানারশি পল্লির দেয়ালে লাগানো একটি কাগজ তাঁর চোখে পড়ে। লেখা—এখানে ফ্রিল্যান্সিং শেখানো হয়। যোগাযোগের ঠিকানা ফার্মগেট। সালমা ফোন করে বিস্তারিত জেনে নেন। শিখতে লাগবে ২০ হাজার টাকা। সালমা তাঁর মায়ের দেয়া কানের দুল বেচে সেই টাকা জোগাড় করেন, ভর্তি হন। তারপর দুই মাসে সালমা কিছুই শিখতে পারেননি। তবে কষ্ট পেয়েছেন খুব। কারন মায়ের দেওয়া দুল বেচে তিনি ফ্রিল্যান্সিং পেশায় সফল হতে চেয়েছিলো। এমন গল্প আছে আরও অসংখ্য। সালমার মতো আরও অনেক তরুণ–তরুণী সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে পথ হারিয়ে ফেলেন। এই বইটির উদ্দেশ্যই হলো, একটি গাইড লাইন দেওয়া। এই বইকে বলা যায় ফ্রিল্যান্সিংয়ের অ–আ–ক–খ। যাতে যে কেউ এই বই পড়ে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে পারেন।
রাহিতুল ইসলাম (Rahitul Islam) একজন বাংলাদেশি তথ্যপ্রযুক্তি সাংবাদিক, লেখক ও নাট্যকার। বর্তমানে দেশের একটি শীর্ষ দৈনিকে সাংবাদিকতা করছেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি সাহিত্যচর্চাও করেন। তবে তাঁর আগ্রহের বিষয় মূলত তথ্যপ্রযুক্তি। সংবাদপত্রে লিখে আর কথাসাহিত্য রচনার মধ্য দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন পাঠকদের এই জগতের জানা-অজানা নানা বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত করাতে। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১২। উল্লেখযোগ্য উপন্যাস: ‘কল সেন্টারের অপরাজিতা’, ‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’, ‘হ্যালো ডাক্তার আপা’, ‘ভালোবাসার হাট-বাজার’ এবং ‘কেমন আছে ফ্রিল্যান্সার নাদিয়া’। ‘আউটসোর্সিং ও ভালোবাসার গল্প’ বইটি ফিলিপাইন থেকে ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘আউটসোর্সিং ও ভালোবাসার গল্প’ বইয়ের জন্য জাতীয় ফ্রিল্যান্সিং অ্যাওয়ার্ড (২০১৯) এবং ‘কল সেন্টারের অপরাজিতা’র জন্য এসবিএসপি সাহিত্য পুরস্কার (২০২১) পেয়েছেন।