"বিজ্ঞান সুফি দর্শন ও রুমী" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: প্রকৃতির রহস্য উদঘাটন ও সত্য অনুসন্ধানে বিজ্ঞানী ও সুফিদের মধ্যে পদ্ধতিগত ভিন্নতা রয়েছে। কিন্তু অবাক করার মতাে বিষয় বহুক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা যে সত্যে উপনীত হয় সুফিরা ইলহাম ও কাশফের মাধ্যমে একই সত্যে উপনীত হন। এই বিষয়টি সবার মাঝে জানানাের তাগিদ থেকেই "বিজ্ঞান, সুফিদর্শন ও রুমী" শীর্ষক বইটি প্রনয়ণ করার প্রণােদনা পেয়েছি। শরিয়ত, তরিকত, হাকিকত, মারেফাত-এর পূর্ণ অনুসরণের মাধ্যমে শুদ্ধ ও নির্মল অন্তরের অধিকারী সুফিরা সবসময়ই আত্মার পরিশুদ্ধতাকে মুখ্য মনে করেন তাই স্বচ্ছ হৃদয় দিয়েই পৃথিবী ও প্রকৃতির ভাষা ও বার্তা তাঁরা উপলব্ধি করেন। সুফিদের শিরােজ বড়পীর আব্দুল কাদির জিলানী (রহঃ) সহ কয়েকজন বিশেষ সুফির সেই সকল উপলব্ধিই বিজ্ঞানের আলােকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এই বইটিতে । তার মধ্যে উল্লেখযােগ্য বিশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুফি ইমামুত তরিকত শায়খ বােরহানুদ্দীন (রহঃ) এর ‘লতিফায়ে খলা তত্ত্ব। পূর্বে সুফিপন্থীদের মধ্যে দশ লতিফার চর্চা ছিল। এর সাথে এগারােতম লতিফা হিসেবে লতিফায়ে খলা ইলমে তাসাওউফে বিশেষ সংযােজন হিসেবে বিবেচিত এই তত্ত্বের একটি বিশেষ দিক হচ্ছে আমাদের দেহ অভ্যন্তরে বেশিরভাগই শূন্য (vacuum) বা খালী। এই খলা বা শূণ্যের ধারণা পদার্থবিজ্ঞানের "matter is mostly empty" ধারণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যা, পদার্থবিদদের কাছে খুবই কৌতূহলদীপ্তক গবেষণার বিষয়। সাম্প্রতিক সময়ে 'হিগস বােসন' নামে গর্ড পার্টিকেলের শক্তিমান অস্তিত্ব আবিষ্কারের মাধ্যমে এই শূন্য বা খালির ধারণা বিজ্ঞানের আলােকে এর গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। আত্নার শুদ্ধতার সার্বক্ষণিক প্রয়াসের মাধ্যমে প্রকৃতির মর্মবার্তা আহরণ করে সুফিরা পৃথিবীতে ভালবাসা ও সম্প্রীতির বাণী ছড়িয়ে দেন। স্রষ্টার ভালবাসা ও সৃষ্টির সেবাই তাঁদের আদর্শকথা ।