থেকে শােকর আদায় করছি মহামহিম রাব্বে কাবার, যার তাওফিক আর অনুগ্রহকে পুঁজি করে বইটির অনুবাদের কাজ সমাপ্ত করতে পেরেছি। আলহামদুলিল্লাহ, সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ। মাওলানা নাদিম আল ওয়াজিদি। ভারতের সুপরিচিত একজন গবেষক ও কথাসাহিত্যিক। দুযুগ ধরে দুহাতে আরবি, উর্দু এবং হিন্দিতে সমানভাবে লিখে যাচ্ছেন, দেশের বিভিন্ন জাতীয় পত্র-পত্রিকায়। এ যাবত পাঠ্যবইসহ লিখেছেন ত্রিশের অধিক বই। হজরতের সঙ্গে আমার পরিচয়ের সময়কাল বছর-দেড়েক হয়েছে মাত্র। আমি ছােট মানুষ হওয়া সত্ত্বেও তিনি আমাকে অনেক ভালােবাসেন। কাছে গেলে হাতেকলমে অনেক কিছু শেখানাের চেষ্টা করেন। সামাজিক যােগাযােগমাধ্যম ফেসবুকে তার সঙ্গে যুক্ত হলে চেনাজানাটা আরও একটু গভীরতর হয়। তিনি যে আমাকে ফলাে করতেন, সেটা আমি খুব একটা বুঝতাম না। একদিন হজরতের কাছে গেলে বললেন, নাজমুল! তুমি তাে বােধ হয় বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলােতে লেখালেখি করাে। তােমাকে দেখলাম, মাঝেমধ্যেই ফটোসহ বিভিন্ন পত্রিকার ই-পেপার ফেসবুকে আপলােড দাও। বললাম, জ্বি হজরত, টুকটাক কিছুটা লেখার চেষ্টা করি। শুনে অনেক খুশি হলেন এবং আমার জন্য দোয়া করলেন। এ সুযােগে আমিও আবদার করে বসলাম, হজরত! আমার ইচ্ছে ছিল, আপনার একটা বই বাংলা ভাষায় অনুবাদ করি। বললেন, মাশাআল্লাহ, তাই নাকি? অনুবাদ করে ফেলাে। অসুবিধা কী! আমি তাে ঢের খুশি। আমার কোন বইটি তােমার পছন্দ? বললাম, আপনি যেটা বলবেন, সেটাই। হজরত হাত বাড়ালেন আলমারিতে। বের করে নিয়ে এলেন তাঁর সবচেয়ে প্রিয় বইটি ‘ফের সুয়ে হারাম লে চল।' একটি অটোগ্রাফ দিয়ে বইটি আমার হাতে দিলেন। বললেন, আমার খুব পছন্দের বই, এটা অনুবাদ করাে! হজরতের দোয়া নিয়েই অনুবাদের কাজ শুরু করে দিই। কিন্তু একাডেমিক পড়ালেখার চাপেঅনেকটা সময় এমনিতেই চলে যায়। যেহেতু পুরাে বইটি ভাঙাচোরা মােবাইলেই টাইপ করা, তাই সময়টা খরচ হয় একটু বেশি। তাছাড়া দুর্ঘটনার শিকার হয়ে বইটির বৃহৎ অংশের অনুবাদ মােবাইলের নােটবুক থেকে মুছে যাওয়ায় সেগুলাে পুনরায় অনুবাদ করতে হয়। যাই হােক, অবশেষে বইটি দুটো সুন্দর মলাটে আবৃত হয়ে আজ পাঠকের হাতে। জানি না, আমার আনাড়ি হাতের অনুবাদ এত বড় উঁচমাপের একজন লেখকের ভাব কতটুকু ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম। হয়েছে। তবে নির্দ্বিধায় এই স্বীকৃতি দিতে পারি, অনুবাদটি সন্দৰ থেকে সুন্দরতর করার জন্য আমার সবটুকু সাধ্য ব্যয় করেছি। লক্ষ্য একটাই, বইটি যাতে পাঠকনন্দিত হয় এবং তার বার্তা যেন সব শ্রেণির মানুষের মন ছুঁতে পারে। সবগুলাে কথা সাবলীল ভাষায় গুছিয়ে বলার চেষ্টা করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, মূল লেখক পাশে থাকায় কোনাে শব্দ বা ঐতিহাসিক বর্ণনা না বুঝলে বােঝার জন্য। সরাসরি তাঁর শরণাপন্ন হতে পেরেছি। এসব কিছুর পরও ভুলত্রুটি থেকে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তাই বিজ্ঞ পাঠকমহলের কাছে। কোনাে ভুলত্রুটি দৃষ্টিগােচর হলে আশা রাখি আমাদের অবশ্যই জানাবেন। ইনশাআল্লাহ পরবর্তী সংস্করণে তা শুধরে নেব। বইটি অনুবাদের ক্ষেত্রে অনেকেই আমাকে উৎসাহ দিয়ে ধন্য করেছেন। বিশেষভাবে কয়েকজন সুহৃদের নাম না বললেই নয়-বন্ধুপ্রতিম প্রিয় মনজুর আহমেদ, আনওয়ারুল কারীম মুস্তাজাব, আহমাদুল হক, তামজীদুল মাওলা কাসেমী এবং কাওসার মাহমুদ। আল্লাহ সবাইকেই দীনের দাঈ হিসেবে কবুল করুন। পাশাপাশি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি দারুল উলূম লাইব্রেরীর কর্ণধার শ্রদ্ধেয় মাওলানা শহীদুল ইসলামের, যার নিঃস্বার্থ ত্যাগ ও ভালােবাসায় আরও অনেকটা পথ এগিয়ে যাবার স্বপ্ন দেখি। আল্লাহ তাঁর অকৃত্রিম ভালােবাসাকে লিহুব্বিহিল কারিম কবুল করুন।