ফারহানা আকতার ৷ জণ্ম-শিক্ষা-পেশা-লেখালেখি : জণ্ম- ১১এপ্রিল,শরীয়তপুর জেলায় ৷ বাবা সরকারী চাকুরীজীবি হওয়ার কারনে তাঁর পুরো শৈশব ও কৈশর কেটেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার ক্যান্টনমেন্টে ৷স্কুল,কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পর্যায়ে তিনি ছিলেন একজন মেধাবী ছাত্রী ৷ তিনি এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি উভয় পর্যায়ে বোর্ড স্কলারশিপসহ কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ন হন এবং স্কুলজীবন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন পর্যন্ত সরকারি স্কলারশিপসহ ফুল-ফ্রি স্টুডেন্টশিপে পড়াশোনা করেন ৷চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘মার্কেটিং ও ইন্টারন্যাশনাল বিজনেজ’ বিষয়ে বিবিএ (অনার্স) ও একই বিষয়ে এমবিএ ডিগ্রী লাভের পর তিনি ২০০৬ সালের জুন মাসে প্রথমে ‘অতীশ দিপঙ্কর ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি’ –এর একটি শাখায় ‘প্রভাষক’ হিসেবে শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন ৷ এরপর ধীরে ধীরে আরও বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে শুরু করেন এবং তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় হছ্ছে, গণ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়,দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় ,উত্তরা ইউনিভার্সিটি ,আর্মি ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন (বিইউপি এর অধিভুক্ত) ও ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনভার্সিটি বাংলাদেশ ৷ তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নানা অনিয়মের কারনে তাকে অনেকটা বাধ্য হয়েই বেশ কয়েকবার তাঁর কর্মস্হল পরিবর্তন করতে হয়েছে ৷ কর্মস্হল পরিবর্তন করলেও তিনি কখনও এক মুহূর্তের জন্যও শিক্ষকতা ও লেখালেখি থেকে নিজেকে বিছ্ছিন্ন করেন নি ৷তাঁর মূল পেশা শিক্ষকতা হলেও জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি নিজেকে অত্যন্ত সচেতনভাবেই শিক্ষকতার পাশাপাশি লেখালেখিতেও সম্পৃক্ত রাখতে চান ৷তিনি বলেন, ‘শিক্ষকতা হছ্ছে তাঁর পেশা আর লেখালেখি হছ্ছে তাঁর নেশা’৷ বর্তমানে তিনি ‘পরিচালক ও সহযোগী অধ্যাপক’ হিসেবে আন্তর্জাতিক রবীন্দ্র গবেষণা ইনষ্টিটিউট (International Rabindra Research Institute) এ কাজ করছেন ৷ এর পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে ও বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গবেষণমূলক কাজেও নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন ৷শিক্ষকতা পেশায় তাঁর সর্বমোট অভিজ্ঞতা সাড়ে ১৬ বছর এবং লেখালেখি করছেন ২০ বছরেরও অধিক সময় যাবত ৷ একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিসেবে তিনি যে যে পদে কাজ করেছেন বা করছেন,তা হলো : ক. প্রভাষক , খ. সিনিয়র প্রভাষক , গ. সহকারী অধ্যাপক এবং ঘ. সহযোগী অধ্যাপক এবং পাশপাশি তিনি যে যে একাডেমিক পদে কাজ করেছেন বা করছেন : ক. প্রতিষ্ঠান পরিচালক, খ. হেড অফ বিবিএ প্রোগ্রাম , গ. হেড অফ এমবিএ প্রোগ্রাম , ঘ. হেড অফ দ্যা ডিপার্টমেন্ট (এ্যাকটিং) ঙ. চেয়ারম্যান এন্ড মেম্বার অফ ডিপার্টমেন্টাল সিলেবাস এন্ড কারিকুলাম ডিভালপমেন্ট প্রোগ্রাম , চ. চেয়ারম্যান এন্ড মেম্বার অফ ডিপার্টমেন্টাল কালচারাল প্রোগ্রাম ও ছ. এসোসিয়েট এডিটর অফ একাডেমিক জার্নাল ইত্যাদি ৷ তাঁর একাডেমিক আর্টিক্যাল (একক লেখক হিসেবে)-৫টি , খ. প্রকাশনাধীন আর্টিক্যাল – ৫টি , গ. প্রকাশনাধীন টেক্সট বুকস (বিবিএ, এমবিএ, সিএ, আইসিএমএ-স্টুডেন্টস এন্ড এক্সুকিউটিভদের জন্য)-৪ টি ৷তাঁর গবেষণাকর্ম বেশ কয়েকটি এবং তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হছ্ছে- ক.আ্ন্তর্জাতিক বানিজ্যের গুরুত্বপূর্ন বিষয়সমূহ , খ. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী ও কর্ম এবং গ. বিভিন্ন মনীষী ও মানুষের যাপিত জীবন সম্পর্কে প্রফেসর ড.আহমদ শরীফের উল্লেখযোগ্য উক্তিসমূহ ও এর বিষয়বস্তু ৷ তিনি লেখালেখি করছেন ছাত্রজীবন থেকেই৷ তাঁর প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ১৯৯৮ সালের জুন মাসে দৈনিক ভোরের কাগজে, তখন তিনি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ-এর স্টুডেন্ট ৷ এরপর জীবনের বিভিন্ন সময়ে তাঁর লেখা ছোটগল্প,প্রবন্ধ ও কলামগুলো প্রকাশিত হতে থাকে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়৷ অতি সাম্প্রতিক সময়ে দৈনিক অনলাইন পত্রিকা ‘bongo-news.com’ এ প্রকাশিত হছ্ছে তাঁর নিয়মিত ধারাবাহিক কলাম-“নতুন প্রজণ্মের চোখে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ”৷ তাঁর যে বইগুলো প্রকাশিত ও প্রকাশনাধীন রয়েছে : ১.সুপ্রিয় দিনলিপি-১ম খণ্ড (প্রকাশিত), ২. সুপ্রিয় দিনলিপি -২য় খণ্ড (প্রকাশিত),৩ .সুপ্রিয় দিনলিপি -৩য় খণ্ড (প্রকাশনাধীন), ৪ . যেখানে শয়তান আছে সেখানে ঈশ্বরও আছেন (Where There Is Devil There Is Also The God) (প্রকাশিত),৫.বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন জার্নাল (ফারহানা আকতার ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সম্পাদকমন্ডলী কর্তৃক সম্পাদিত)-(প্রকাশনাধীন)ও ৬. নতূন প্রজণ্মের চোখে বাংলাদেশের মুক্তিযুদধ(প্রকাশনাধীন)। এছাড়া বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাতে প্রকাশিত প্রবন্ধ ও কলাম : ১০ থেকে ১৫ টি ৷ ৷ইতিমধ্যে ফারহানা আকতার এর ‘সুপ্রিয় দিনলিপি ১ম খণ্ড ও সুপ্রিয় দিনলিপি ২য় খণ্ড’ বই দুটো সম্পর্কে এর সারমর্ম, রিভিউ ও মন্তব্য কিছু কিছু পত্র-পত্রিকায় (তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি পত্রিকা হছ্ছে,দৈনিক মানবকণ্ঠ,আজাদী ও দেশ রূপান্তর) প্রকাশিত হলেও মূলতঃ ‘সুপ্রিয় দিনলিপি’ এর সবগুলো খণ্ডই হছ্ছে এককথায় রাষ্ট্র, সমাজ,পরিবার সম্পর্কে ও নতুন প্রজন্মের জন্য একটি সুস্হ-সুন্দর ও শুদ্ধ মনোজগত তৈরীর নিমিত্তে লেখকের স্বছ্ছ চিন্তা-চেতনা, নীতি-নৈতিকতা ও স্বপ্নবোধের সরল বহিঃপ্রকাশ ৷ ‘দৈনিক মানবকণ্ঠ’ তার সাহিত্য পাতায় ‘সুপ্রিয় দিনলিপি-২য় খণ্ড’ সম্পর্কে বলেছে, “সুপ্রিয় দিনলিপি : শৈল্পিক একটি বই যা একসময় অমরত্ব লাভ করবে” –(প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারী’২০২০)৷ ফারহানা আকতার মনে করেন, "শিক্ষকগণ শিক্ষার আলো দ্বারা তাদের ছাত্রদের জীবন আলোকিত করে তুলবেন আর সাহিত্যিকগণ মানব-জীবনের কৃষ্টি-সংস্কৃতি, সুখ-দুঃখ, ন্যায়-নীতিবোধ , দেশপ্রেমবোধ ও মানব ইতিহাসের সঠিক আলো-অন্ধকার দিকগুলো তাদের পাঠকদের সামনে তুলে ধরার মাধ্যমে তাদের জীবনকে আলোড়িত করে তুলবেন ৷ আর এটাই হওয়া উচিত শিক্ষার ধর্ম , সাহিত্যের ধর্ম ৷ যা খুশী তা শেখানোর নাম শিক্ষকতা নয় এবং ঠিক একইভাবে যা খুশী তা লেখার নাম সাহিত্য নয় “৷ তিনি একজন খাঁটি বাঙালি মুসলমান এবং পরিপূর্নভাবে একজন অসাম্প্রদায়িক,দেশপ্রেমিক,সংস্কারমুক্ত,আধুনিক,পরিছ্ছন্ন ও প্রগতিশীল মনের মানুষ ৷লেখালেখির এই ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলা সাহিত্যের জগতে কথা সাহিত্যিক “ফারহানা আকতার” এর নামটি জ্বলজ্বলে তারার মতো উজ্জ্বল হয়ে বেঁচে থাকবে৷ বর্তমানে তিনি স্হায়ীভাবে ঢাকায় বসবাস করছেন৷ শিক্ষক ও কথা-সাহিত্যিক ফারহানা আকতার তাঁর ‘সুপ্রিয় দিনলিপি-২য় খণ্ড’ বইটিতে বলেছেন, “বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে একটি আত্মনির্ভরশীল, সংস্কারমুক্ত, স্বশিক্ষিত, মেধাবী, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরতে হলে আমাদের সবাইকে আরেকটি অলিখিত মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং সেখানে আমাদের মূল অস্ত্র হবে-আমাদের কৃষ্টি,সংস্কৃতি,ইতিহাস,ঐতিহ্য,ভাষা ও অন্যান্য সকল জাতীয় অর্জন এবং একইসঙ্গে রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা করা” [দৈনিক দেশ রূপান্তর]৷আমাদের জীবনকে সুন্দর রাখার জন্য তিনি বলেছেন, “জীবনের বড় বড় কাজগুলো প্রিয়জনের কাছ থেকে ইন্সপারেশন নিয়ে, প্রিয়জনকেসাথে নিয়ে কিংবা প্রিয়জনকে পাশে রেখেই করতে হয়৷প্রিয়জনকে পরাজিত করে বিজয়ের আনন্দ উপভোগ্য হয়না৷তাই জীবনকে সর্বদা সুন্দর রাখার জন্য প্রিয়জনের সাথে প্রতিযোগীতা পরিত্যাজ্য” [দৈনিক আজাদী] ৷