লিডারশীপ নিয়ে লেখা দেশি-বিদেশি বইয়ের সংখ্যাও হয়তো লাখখানেক ছাড়িয়ে যাবে। সবগুলো যদিও পড়ার উপযোগী নয় কেননা সেগুলোতে সারমর্ম কিছু থাকেনা, বরং একই কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বারবার লেখা থাকে। তবে ভালো বইয়ের সংখ্যাও আছে প্রচুর। লিডারশীপ শেখার জন্য আমার নিজের পছন্দের কয়েকজন গুরু হলেন পিটার ড্রুকার, জ্যাক ওয়েলচ, জন ম্যাক্সওয়েল, জিম কলিন্স, ব্রায়ান ট্রেসি এবং গ্র্যান্ট হারবারট। এদের লেখা আমি প্রায় নিয়মিতই পড়ি অথবা ইউটিউওবের ভিডিওগুলো দেখি। অন্যদের লেখা যে পড়িনা তা একেবারেই না, বরঞ্চ চেষ্টা করি যত বেশি সংখ্যক লেখকের লেখা পড়তে কেননা তাতে একই জিনিসের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভংগী জানা যায়। তাছাড়া সময়ের সাথে সাথে মানুষের চিন্তাভাবনা, চাহিদা ইত্যাদিও খুব দ্রুতই পরিবর্তিত হচ্ছে, সুতরাং গতবছরের বাস্তবতা এবছর বদলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। মানুষের মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন মানেই অনেকগুলো সংজ্ঞার পরিবর্তন, পদ্ধতির পরিবর্তন। তাই নিয়মিত পড়তে হবে।
লিডারশীপের সংজ্ঞা আর গুণাবলী নিয়ে নানান গুনীজনের কয়েক হাজার বিখ্যাত উক্তিও আছে। তাহলে এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে এত হাজার হাজার সংজ্ঞা আর বইয়ের ভিড়ে আবার নতুন করে আরেকটি বই লেখার প্রয়োজন কি? বর্তমানে পৃথিবীর জনসংখ্যা সাড়ে সাতশ কোটিরও বেশি। সাড়ে সাতশ কোটি মানুষ মানে তাদের সাড়ে সাতশ কোটি ধরনের চিন্তা ভাবনা। অনেকটা আংগুলের ছাপের মত। দুইজনের মধ্যে খুব মিল থাকলেও কোন একটা জায়গায় তারা স্বকীয়, অনন্য। এটা পারিপার্শ্বিকতা, অভিজ্ঞতা, জীবনদর্শন, এরকম অনেকগুলো কারণে হয়ে থাকে। তাই আমি অনেকের লেখা পড়ি ঠিকই কিন্তু কিছু কিছু জায়গা আছে যেখানে আমার চিন্তাধারা হয়তো অন্যদের থেকে খুব সামান্য হলেও আলাদা। সেকারণেই আমি আমার দৃষ্টিকোণে লিডারশীপ বা নেতৃত্ব কি এবং তাদের কি কি গুণাবলি থাকা উচিৎ এবং আসলে কি করলে সেই গুনাবলি অর্জন করা যেতে পারে, সেগুলোর কিছু অংশ তুলে ধরার জন্য বইটি লিখতে উদ্দ্যোগী হয়েছি। জালালুদ্দিন রুমি বলেছেন, “কে শুনলো আর কে কি ভাবলো তা চিন্তা না করে আমি পাখির মতো গান গাইতে চাই”। আমিও নাহয় পাখি হলাম। -- লেখক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ এবং নিউ হ্যভেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জনের পর তার ক্যরিয়ার শুরু করেছিলেন ১৯৯৬ সালে টয়োটা মটরস (ইউএসএ) তে ম্যনেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে যোগদান এর মাধ্যমে। তিনি বর্তমানে এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিঃ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং ও সাপ্লাই চেইন বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন । এর আগে তিনি টিম গ্রুপ, ডিবিএল সিরামিকস লিঃ, ব্র্যাক ডেইরী ও ফুড এন্টারপ্রাইজ, রহিমআফরোজ (বাংলাদেশ) লিঃ এবং বেঙ্গল মিট প্রসেসিং ইন্ডাষ্ট্রিজের বিভিন্ন শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন করেন। কর্ম জীবনের বাইরেও তিনি শিক্ষকতা করতে ভালবাসেন। তিনি নর্থ সাউথ ও আইএউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসাবে কাজ করেছেন। তৌফিকুর রহমান একজন সফল ট্রেইনার। তিনি বিক্রয়, বাজারজাতকরণ, লিডারশীপ, ব্যবসা পরিচালনা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের উপর ১০০টিরও বেশী প্রফেশনাল ট্রেনিং প্রোগ্রাম পরিচালনা করেছেন। তৌফিকুর রহমান বাংলাদেশের প্রথম ইন্টারন্যাশনাল কোচিং ফেডারেশন (আইসিএফ) এর সদস্য প্রফেশনাল কোচ। পেশাগত কারণে তিনি এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২৯টি দেশ এবং বাংলাদেশের প্রায় সকল উপজেলা ভ্রমণ করেছেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি এক পুত্র এবং এক কন্যা সন্তানের জনক।