”আমরা হাদীছ মানতে বাধ্য” বইটির সম্পর্কে কিছু কথাঃ সকল প্রশংসা এই নিখিল বিশ্বের একমাত্র সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর জন্য। শান্তির বারিধারা বর্ষিত হােক মানবজাতির মুক্তির অগ্রদূত রাসূল (ছাঃ)-এর উপর। মানব জীবনের সকল সমস্যার যুগােপযােগী সমাধানের একমাত্র প্লাটফর্ম ইসলাম। যার মৌলিক উত্স দুটি। কুরআন ও হাদীছ। যুগে যুগে ইসলাম বিদ্বেষীরা কুরআন-হাদীছের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠা ইসলামের শক্তিশালী দূর্গকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। শক্তির দাপটে, বাহুর বলে ইসলামকে দমিয়ে না রাখতে পেরে তারা পিছন থেকে পিঠে ছুরি চালানাের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তাদের এই দূরভিসন্ধির নির্মম শিকারে পরিণত হয়েছে হাদীছ। ইসলামের ২য় উস হাদীছের ভাণ্ডারকে অকেজো ও অচল করে প্রকারান্তরে ইসলামকে অকেজো করাই তাদের এই ষড়যন্ত্রের চূড়ান্ত লক্ষ্য। হাদীছ বিষয়ে মুসলিমদের অন্তরে সন্দেহ সৃষ্টি করার জন্য প্রাচ্যবিদ ও তাদের পা-চাটা গােলামরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। নাম ও সাইনবাের্ড পরিবর্তন করে পুরাতন বিষ মুসলিমদের গলাধঃকরণের অপকৌশল চালানাে হচ্ছে। নতুন বােতলে পুরাতন মদ সাপ্লাই হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ যখনই হাদীছ শাস্ত্র নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছে, তখনই মুহাদ্দিছগণ সেই ষড়যন্ত্রের মূলােৎপাটন করার জন্য অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। নিকট অতীতে ভারতের মাটিতে মাওলানা ইসমাঈল সালাফী, মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী, হাফেয যুবাইর আলী যাঈ | (রহঃ) এবং আরবের মাটিতে আব্দুর রহমান ইয়াহইয়া আল-মুআল্লিমী, আল্লামা নাছিরুদ্দীন আলবানী, শায়খ আহমাদ শাকির (রহঃ) প্রমুখ মুহাদ্দিছগণ বিভিন্ন অপবাদ, বিভ্রাট, সংশয় ও অভিযােগ থেকে হাদীছের পবিত্র আঁচলকে রক্ষার পিছনে যারপর নেই ভূমিকা পালন করেছেন। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, বাংলা ভাষায় এ বিষয়ে কোন পূর্ণাঙ্গ কিতাব আমাদের চোখে পড়েনি। যােগ্যতার অভাব থাকলেও হাদীছের প্রতি ভালবাসা থেকেই মুহাদ্দিছগণের অনুসরণে এ বইটি লেখার কাজে হাত দিই। যুগের চাহিদা ও প্রয়ােজন অনুযায়ী এ বইয়ে বিভিন্নভাবে হাদীছ অস্বীকারকারীদের উদ্ভট যুক্তি এবং উদ্দেশ্য প্রণােদিত বিভ্রাটের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। বাংলা ভাষা-ভাষী মুসলিম উম্মাহকে জানানাের চেষ্টা করা হয়েছে তাদের মুক্তি ও নাজাতের একমাত্র পথ। মহান আল্লাহর কাছে দুআ করি, তিনি যেন তার রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছের হেফাযতে এই সামান্য পরিশ্রমটুকু কবুল করেন! এর দ্বারা ঐ সমস্ত ভাইদের হেদায়াত দান করেন, যারা যুক্তির মারপ্যাচে হাদীছেরাসূলকে অস্বীকার করার মত জঘন্য গুণাহে লিপ্ত। সর্বোপরি আমার পিতা-মাতা, ভাই-বােন, পরিবার-পরিজন সকলকে তার দ্বীনের খাদেম হিসেবে কবুল করেন- আমীন! ছুম্মা আমীন!
আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক জন্ম গাইবান্ধায়। বেড়ে উঠা রাজশাহীতে। পিতা আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, মাতা উম্মে মারিয়াম রাযিয়া। উভয়েই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের হাতেই লেখকের পড়াশোনার হাতেখড়ি। কুরআন ও হাদীছের উচ্চতর জ্ঞান অর্জন করেছেন দারুল উলূম দেওবান্দ, ভারত ও মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব থেকে। কুরআন মাজীদ হিফয সম্পন্ন করেছেন গিলেটবাজার মাদরাসা বানারস থেকে। তার অন্যতম শিক্ষকগণ হচ্ছেন মাওলানা বদিউজ্জামান (রহ.), শায়খ আব্দুল খালেক সালাফী, মুফতী সাঈদ আহমাদ পালানপুরী, মাওলানা নিয়ামাতুল্লাহ আ'যমী, মুফতী হাবীবুর রহমান আ'যমী, শায়খ আওয়াদ আর-রুওয়াইছী, শায়খ আয়মান আর-রুহাইলী, শায়খ আনীস ত্বাহের, শায়খ আব্দুল বারী বিন হাম্মাদ আল-আনছারী, শায়খ মুহাম্মাদ বিন হাদী আল-মাদখালী প্রমুখ। হাদীছ নিয়ে গবেষণা ও লেখালেখি করতে ভালবাসেন। গবেষণার পাশাপাশি দেশে সমাজ সংস্কার ও সেবামূলক কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদীছ ডিপার্টমেন্টের উলূমুল হাদীছ বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত।