"হিফযুল কুরআন ছাত্রসহায়িকা" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের যিনি বলেছেন- “আমিই এই কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং এর সংরক্ষণও করবাে আমিই।” প্রায় দেড়হাজার বছরের হাজারাে উত্থান পতনের পরও আল-কুরআনের প্রতিটি শব্দ ও অর্থ সম্পূর্ণ অক্ষত ও অবিকত অবস্থায় পথিবীর আনাচে-কানাচে বিদ্যমান থাকাটাই এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ। আল-কুরআনের শাব্দিক সংরক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলাে হিফযুল কুরআন। কুরআন হিফ্য করার জন্যে ভালাে শিক্ষক ও হিফ্যখানা যেমন জরুরি, তেমনি পূর্ণাঙ্গ ও আদর্শ হাফেযে কুরআন তৈরির জন্যে এমন একটি নির্দেশিকা অবশ্যই জরুরি যাতে থাকবে হিযের যাবতীয় নিয়ম-কানুন ও জবাবদিহিমূলক বিধি-ব্যবস্থা। যুগচাহিদা ও সময়ের প্রেক্ষাপটে জাগতিক শিক্ষার হার উত্তরােত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিক্ষা ও শিক্ষাব্যবস্থার মানােন্নয়ন ক্রমশ ত্বরান্বিত হচ্ছে। উপস্থাপনা ও বর্ণনাভঙ্গির সহজতর আধুনিকায়ন হচ্ছে। তবে আমরা কেনাে পিছিয়ে থাকবাে? দেশের প্রতিটি অঞ্চলে- শহরগ্রাম নির্বিশেষে সর্বত্র ছড়িয়ে আছে হাজার হাজার হিফ্যখানা । কাঠামােগত দুর্বলতা, অদক্ষতা ও নিয়মানুবর্তিতার অভাবে অধিকাংশ হিফযখানার শিক্ষাদান ও পড়াশােনার মান খুবই নিচু। যে কারণে এসব হিফযখানা থেকে বিশুদ্ধ তিলাওয়াতে অভ্যস্ত মানসম্পন্ন পূর্ণাঙ্গ হাফেযে কুরআন খুব কমই তৈরি হয়। শিক্ষকদের যােগ্যতা-দক্ষতা ও আন্তরিকতার পাশাপাশি যথাযথ জবাবদিহিতার জন্যে হিফযখানার পূর্ণাঙ্গ নেছাব সম্বলিত মানসম্মত একটি গাইডবই সময়ের দাবি। এ উপলদ্ধি থেকেই ‘হিফযুল কুরআন ছাত্রসহায়িকা' নামে হিফযবিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য গাইড বই তৈরি করার প্রয়াস পেয়েছি। বইটি সম্পূর্ণ এদেশের পরিবেশ-পরিস্থিতির আলােকে রচিত। এ গাইড বইয়ে হিফয শিক্ষার্থীর জন্য সঠিক সময়ে সঠিকভাবে একজন ভালাে মানের/আদর্শ হাফেযে কুরআন হিসেবে গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে সহায়ক কতগুলাে বিধিবদ্ধ নিয়ম-নীতি বা বিধিব্যবস্থা উল্লেখ করা হয়েছে। হিফযখানার শ্বাশত নিয়ম-কানুন হিসেবেই যেগুলাে প্রচলিত ও গ্রহণযােগ্য। (মরহুম হাফেজ্জী হুজুর রহ.-ই মূলত এসবের প্রবক্তা)। হিফযখানার পূর্ণাঙ্গ নেছাব অনুযায়ী তাজবীদ দোয়া-মাসায়িল ইত্যাদি সংযােজনের মাধ্যমে বইটিকে অধিকতর সমৃদ্ধ ও গ্রহণযােগ্য করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাজবীদ এবং দোয়া-মাসায়িল অধ্যায়ে সাধুভাষা ব্যবহার করা হয়েছে; যেন শিক্ষার্থীরা প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সহজে ছন্দ-সুরের মতাে পড়তে পারে।