মার্কসবাদ অধ্যয়ন করা মানে সমাজের বৈশিষ্ট্যগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা, যে সমাজে আমরা আছি তাকে ভেতর থেকে প্রত্যক্ষণ করা; এই ব্যবস্থায় সামাজিক সম্পর্কের চরিত্র প্রত্যক্ষত দেখা! এটা অনুধাবনের পর আমাদের ত্রুটিপূর্ণ ভ্রান্ত বিশ্বাস এবং ভুল অভ্যাসগুলো উল্টে যাবার ঘটনা অবশ্যই ঘটবে। যেখানে অব্যবহিত পরিবর্তন সম্ভব সেখানে তখনই রূপান্তর ঘটতে হবে। যেখানে কেবলমাত্র ধীরে ধীরে পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তন ঘটা সম্ভব সেখানে ক্রমান্বয়ে রূপান্তর ঘটতে হবে। যে সমাজে আমরা বসবাস করি সেখানে অবশ্যই অনেক খারাপ বিষয় রয়েছে। বর্তমানে অবস্থা এমন যে কোটি কোটি মানুষ সুস্থ থাকার মতো প্রয়োজনীয় খাবার পায় না, বসবাসের যোগ্য আশ্রয় পায় না। সমাজের সর্বত্র অন্যায় কর্মকা- অবাধে চলছে! সর্বদিকে লড়াই অত্যাসন্ন! বিশ্বের অনেক অঞ্চলে যুদ্ধাবস্থা বিরাজমান। কিন্তু, কেন এই যুদ্ধের প্রয়োজন হচ্ছে? সৈনিক হিসেবে লাখ লাখ মানুষকে যুদ্ধে কেন জীবন দিতে হবে? কাদের প্রয়োজনে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে? কোন শ্রেণীর স্বার্থে? কোন শ্রেণী তার নিজের স্বার্থে এই যুদ্ধ পরিস্থিতি ডেকে আনছে? এমন অনেক বিষয় আছে যা নিয়ে অবশ্যই ভাবতে হবে এবং ভালোভাবে বুঝতে হবে। তুমি কোন ধরনের সমাজের প্রত্যাশা কর? আমাদের প্রত্যেকেই একটা সুস্থ সুন্দর সমাজ চাই। এমন এক সমাজ যেখানে দারিদ্র্য, ভিক্ষাবৃত্তি, অন্যায় যুদ্ধ-বিগ্রহ ও মারামারি থাকবে না, এমনই এক আদর্শ সমাজ আমরা চাই। তুমি নিশ্চয় এখন বুঝেছ যে এই মানব সমাজ এবং মানবীয় সম্পর্ক বোঝার জন্য অর্থশাস্ত্র জানা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসা বিজ্ঞান বা উদ্ভিদ বিজ্ঞান জেনে একজন কি মানবীয় সম্পর্কের চরিত্র বুঝতে পারবে? অর্থশাস্ত্র জেনে কি বোঝা সম্ভব হবে? এই বই আবার পড়! আরও একটু বড়ো হবার পর মার্কসের ‘ক্যাপিটালের প্রাথমিক পাঠ’ বইখানা পড়! তারপর নিজের পথ বেছে নাও। তোমাদের মধ্যে অনেকে অবশ্যই চাকরী করবে আবার অনেকে অন্যদের চাকরী দেবে! তোমাদের অনেকে হয়তো নিজেই লড়াই করবে আবার অনেকে অন্যদের লড়াইয়ে নামতে বাধ্য করবে! অনেক ছেলেমেয়ে তাদের পিতামাতার মতো একই শ্রেণীভুক্ত থাকবে। তারা তখন পিতামাতার শিক্ষাই আত্মস্থ করবে। তা সত্ত্বেও, নিজের একটা জ্ঞান অবশ্যই থাকতে হবে! ছেলেমেয়েরা! তোমরা সর্বদাই তিনটা বিষয় চিন্তা করবে! (১) ন্যায্যতা, (২) ন্যায্যতা এবং (৩) ন্যায্যতা। অর্থাৎ, ন্যায়বিচার।
সূচিপত্র ১. ‘অর্থ’ কী? ২. ‘জিনিস’ কী? ৩. মানুষ কীভাবে ‘জিনিস’ তৈরি করে? ৪. শার্টটা সেলাই করেছে কে? ৫. কাঁচা মালের কাঁচামাল! ৬. ‘গাছের’ কাঁচামাল কী? ৭. আনুষঙ্গিক সামগ্রী ৮. ‘শ্রম’ কী? ৯. যে শ্রমে কোন জিনিস তৈরি হয় না ১০. সকল ‘শ্রম’ কাজ, কিন্তু সকল ‘কাজ’ শ্রম নয়! ১১. ‘বিনিময়’ কী? ১২. জিনিসের ‘ব্যবহারিক মূল্য’ ১৩. জিনিসের ‘বিনিময় মূল্য’ ১৪. একটা জিনিস দ্রুততার সাথে (?) অথবা আলসেমি করে তৈরি করা হলে কী ঘটে? ১৫. পুরোন শ্রম এবং নতুন শ্রম ১৬. আমরা কীভাবে ‘মূল্য’ দেখতে পারি? ১৭. জিনিসের মূল্য কেন ওই জিনিসের বাইরে অস্তিত্বশীল থাকে? ১৮. মূল্য হলো অস্বাভাবিক! ১৯. সব মূল্য শ্রমের অধিকারভুক্ত! এটা কোন পদার্থের অধিকারে থাকে না! ২০. প্রাকৃতিক বস্তু শ্রম = জিনিস; মূল্য নেই মূল্য = পণ্য ২১. বিনিময়ের বার্টার পদ্ধতিতে সমস্যা! ২২. অবশেষে অর্থের আগমন! ২৩. অর্থ দিয়ে মানুষ কী করে? ২৪. অর্থ এক অদ্ভুত জিনিস যার ‘ব্যবহারিক মূল্য’ নেই, শুধুমাত্র ‘মূল্য’ ধারণ করে! ২৫. অর্থ কি বিনিময়ের একটা মাধ্যম? ২৬. অর্থ হলো সকল জিনিসের ‘মূল্যরূপ’ ২৭. কাগজের নোট (অর্থ) এক অদ্ভুত জিনিস যা শুধু ‘ব্যবহারিক মূল্যহীনই’ নয় ‘মূল্যহীনও’ বটে! ২৮. সোনার জায়গায় কি কাগজের নোট মুদ্রা হিসেবে আসলো? ২৯. আমাদের কেন শ্রম দিতে হবে? ৩০. শ্রমের পার্থক্য ৩১. মূল্য মানে শ্রম, কিন্তু শ্রম মানে মূল্য নয় ৩২. শ্রম কীভাবে ‘মূল্যে’ রূপান্তরিত হয়? ৩৩. অর্থ হলো ‘বিমূর্ত’ শ্রম ৩৪. ‘মানবীয় সম্পর্ক’ মানে ‘শ্রম সম্পর্ক’ ৩৫. ‘শ্রম শোষণ’ শুরু হলো! ৩৬. দাস মালিকদের স্থূল ও বিকৃত সংস্কৃতি! ৩৭. ধনী এবং গরিবের মধ্যে বৈষম্যের কারণ! ৩৮. শত্রুভাবাপন্ন শ্রেণী ৩৯. ‘সম্পত্তি’ নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন উত্থাপন করা উচিত! ৪০. দাসভিত্তিক সমাজে ব্যবসা এবং ব্যবসায়িক মুনাফা, ঋণ ও সুদ শুরু হলো! ৪১. দাসভিত্তিক সমাজে ‘রাষ্ট্রের’ উদ্ভব ৪২. দাসদের ধর্মীয় পাঠ শিক্ষাদান : পাপ ও পুণ্য! স্বর্গ ও নরক!! ৪৩. মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক! ৪৪. জমি মালিকদের সমাজ ৪৫. ‘জমির খাজনা’ মানে ‘শ্রম শোষণ’! ৪৬. পুঁজিবাদী ব্যবস্থার শুরু! ৪৭. পুঁজির একমাত্র লক্ষ্য : মুনাফা ৪৮. পুরোন শ্রম নতুন শ্রম = মোট শ্রম; উৎপাদন উপায়ের মূল্য শ্রমিকের শ্রমের মূল্য = পণ্যের মূল্য ৪৯. ‘দাম’ সম্পর্কিত কিছু বিষয় ৫০. ‘উদ্বৃত্ত শ্রম’ কীভাবে সংঘটিত হয়? ৫১. ‘উদ্বৃত্ত মূল্য’ কে ভোগ করবে? ৫২. উদ্বৃত্ত শ্রম, উদ্বৃত্ত মূল্য এবং উদ্বৃত্ত উৎপন্ন দ্রব্য ৫৩. ‘পুঁজি’ এক বিরাট মিথ্যা! ৫৪. কে মুনাফা পাবে : পুঁজি অথবা পুঁজিপতি? ৫৫. ভূমি খাজনা দু’টো অংশে পরিণত হয়! ৫৬. বর্গাদার কৃষক শ্রম নিয়ে সচেতন থাকে না! ৫৭. দুনিয়ার সর্বত্র এখনও শ্রম শোষণ চলছে! ৫৮. বুর্জোয়া যাদুকর! ৫৯. ‘দাম’ বিষয়ক প্রধান সন্দেহ! ৬০. মূল্য সম্পর্কে অনুসন্ধান : ২ হাজার বছর আগে যার শুরু! ৬১. বুদ্ধিজীবীর অজ্ঞতা! ৬২. শ্রম শোষণের গোপন রহস্য কে আবিষ্কার করেন? ৬৩. উৎপাদনশীল এবং অনুৎপাদনশীল শ্রম! ৬৪. অনুৎপাদনশীল শ্রম কি উদ্বৃত্ত মূল্য দেয়? ৬৫. পুঁজিপতির কর্মস্থলে অনুৎপাদনশীল শ্রমিক ৬৬. উৎপাদন উপায়ের মূল্যের হস্তান্তর ৬৭. ব্যবসায়িক কাজের শ্রমিকরা অনুৎপাদনশীল শ্রমিক ৬৮. নির্দিষ্ট একটা দেশের সমস্ত অর্থ উৎপাদনশীল শ্রমিকদের শ্রমের ফসল ৬৯. উৎপাদন পরবর্তীতে যুক্ত মূল্য ৭০. উৎপাদনের পরবর্তীতে ৭১. বিনিময় সংশ্লিষ্ট শ্রম মূল্যে রূপান্তরিত হয় না ৭২. পারিবারিক শ্রম ৭৩. প্রতিযোগিতা! এক ন্যক্করজনক অভিব্যক্তি ৭৪. উৎপাদনশীলতা (উৎপাদনের ক্ষমতা) ৭৫. শাসক শ্রেণীর মতাদর্শই জনগণের মতাদর্শ গঠন করে! ৭৬. ভারি মেশিন, উড়োজাহাজ, কম্পিউটার : সবগুলোই হাতিয়ার! একটা সূচ যেমন হাতিয়ার! ৭৭. বেকারত্ব পুঁজিবাদী ব্যবস্থার সৃষ্টি! ৭৮. সব মজুরি ‘শ্রমশক্তির মূল্য নয়’! ৭৯. পুঁজিপতিদের আয়ের কয়েকটা দৃষ্টান্ত ৮০. ভারতে বর্ণভেদ : ‘শ্রম শোষণের’ ফসল ৮১. পুঁজিবাদী দাম ৮২. পুঁজিবাদী অর্থনীতিবিদরা ‘মুনাফা’ সম্পর্কে কী বলেন? ৮৩. অর্থনৈতিক সংকট : পুঁজিবাদী ব্যবস্থার সৃষ্টি ৮৪. আরও অর্থনৈতিক সংকট ৮৫. সকল মানুষই শ্রেণী মানুষ : ‘শ্রেণী’ একক অখ- সত্তাবিশিষ্ট নয়! ৮৬. শ্রমিক শ্রেণী সকল যুগের আবর্জনায় কলঙ্কিত ৮৭. শোষণের এই জগতের কখনও কি পরিবর্তন হবে? ৮৮. বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে সহাবস্থান কি সম্ভব? ৮৯. মাথা - চিন্তা করার জন্য! ৯০. সোনালী যুগটা তো সামনে, পিছনে নয়! ৯১. সর্বসমতাভিত্তিক সমাজের শুরু! ৯২. সমাজতন্ত্রের পরে সাম্যবাদ; সাম্যবাদের পরে সাম্যবাদ! ৯৩. শ্রমিক শ্রেণীর কী করতে হবে? ৯৪. প্রকৃত সত্যঋদ্ধ বাস্তবতা ভুল বিশ্বাসকে পরাজিত করতে বাধ্য!