দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ। বিশ্বের মানুষ এবং নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতা দখল আর প্রভাব বিস্তারের জন্য আর কোনো যুদ্ধ হবে না। আসলেই হয়নি। ওদিকে ফুকুয়ামা দাবী করে বসলেন, এ সভ্যতা পূর্ববর্তী সব সভ্যতার ভালোটা নিয়ে সবচেয়ে সেরা সভ্যতা। এর চেয়ে ভালো কিছু হবে না, হতে পারে না। বিশ্বও সানন্দে মেনে নিলো ফিরিঙ্গিদের শ্রেষ্ঠত্ব, ভাসতে চাইল স্বাধীনতার ভেলায়। পাঠক! আপনিও কি তাদের একজন? আপনিও কি সেই নতুন পৃথিবীর স্বাধীন মানুষ? আমি আগাম দুঃখিত, বইটি আপনাকে হতাশ করবে। আপনি কি সত্য জানতে চান? তাহলে বইটি আপনার চিন্তার খোরাক যোগাবে। বইটি শুরুই হবে আজকের ‘মহান’ সভ্যতার ভয়াবহ অতীত দিয়ে। দেখাবে, কীভাবে অতীত থেকে তারা শিক্ষা নিয়েছে। একে একে আপনি পরিচিত হতে থাকবেন আপনার মানসিকতা, চিন্তা নিয়ন্ত্রণের ভয়াবহ সব পদ্ধতি, শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, নজরদারী, ভয়াবহ সব শারীরিক এক্সপেরিমেন্ট ও মাফিয়া-গডফাদারদের সাথে। পৃথিবীর নিকৃষ্টতম নাজি বিজ্ঞানীদের পূণর্বাসন, ওরওয়েলিয়ান স্টেটের চেয়েও জঘন্য মানের নজরদারী দেখে আপনার মনে হবে, এ সভ্যতা পূর্ববর্তী সব সভ্যতার খারাপটা নিয়ে সবচেয়ে জঘন্য সভ্যতা। ও হ্যাঁ, আপনার জঘন্য মনে হবে না। কেননা তারা এটাও নিশ্চিত করেছে, আপনি যেন অবচেতন মনেই দাসত্বকে স্বাধীনতা, যুদ্ধকে শান্তি, অজ্ঞতাকেই শক্তি হিসেবে মেনে নেন—ঠিক যেমন জর্জ ওরওয়েল বলেছেন। নোম চমস্কি ঠিকই বলেছিলেন, “স্বৈরাচারি রাষ্ট্রের হাতিয়ার মেশিনগান, আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অস্ত্র হলো Mind Control বা বিবেক নিয়ন্ত্রণ।” পাঠক! স্বাগতম আপনাকে।