ধর্ম হল মানুষের পক্ষে কোন উচ্চতর অদৃশ্য শক্তিকে স্বীকার করে নেওয়া, যে শক্তি মানুষের অদৃষ্টকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং যা মানুষের আনুগত্য, শ্রদ্ধা এবং পূজা পাবার অধিকারী। ধর্ম মানুষের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং সেই সাথে একটি সার্বভৌম ধারণাও বটে। সেই ধর্ম ব্যক্তির জীবনে এবং জাতির জীবনে যথার্থ সংহতিও আনে। ধর্মের প্রধান ভূমিকা হল মানুষের সঙ্গে মানুষের প্রীতির বন্ধনকে দৃঢ় করে তোলা। ধর্মের আচার-অনুষ্ঠান, রীতিনীতি, নিষ্ঠারসাথে পালন করা এবং একই সাথে অপরের প্রতি বিদ্বেষপোষণ, ঘৃণা, হিংসার মনোভাব বহন করা সঠিক ধর্মবোধের পরিচয় নয়। বরং ধর্ম প্রতিটি মানুষকে নীতিপরায়ণ, সদাচারী, কর্তব্যপরায়ণ, উদার ও সংযমী হতে শিক্ষা দেয়। সেই সাথে ধর্ম মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক উভয় প্রকার কর্তব্য সম্পাদনে সমানভাবে সচেতন করে তোলে। ধর্মের প্রকৃত অর্থ উপলব্ধি করলে মানুষ বুঝতে পারবে যে, ধর্মন্ধ তাই মানুষকে সংকীর্ণমনা, ক্ষুদ্রচেতা, স্বার্থপর ও নির্বিচারী করে তোলে। তাই ধর্মকে যদি বস্তুনিষ্ঠ এবং একাডেমিক দৃষ্টিকোন থেকে অধ্যয়ণ করা যায়, তাহলেই সম্ভব ধর্মের প্রকৃত উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা। একই সাথে একজনসচেতন মানুষকে ধর্মকে সঠিকভাবে জ্ঞাত হওয়া ও বুঝার জন্য ধর্ম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শব্দের অর্থ ও এর প্রেক্ষাপট জানাও জরুরী। আর এই কাজটি করার জন্য এই গ্রন্থের লেখক এগিয়ে এসেছেন। কারণ বাংলা ভাষায় প্রথম, একত্রে ও একক কোনগ্রন্থে ধর্ম সম্পর্কিত বিভিন্ন শব্দ, কথা, উপ-কথা, সেই সাথে পৃথিবীর প্রধান প্রধান ধর্ম, প্রধান সভ্যতার ধর্ম, আফ্রিকার ধর্ম এবং ধর্ম সংশ্লিষ্ট প্রবাদসহ নানান সব বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বা টিকা আকারে আলোচনা অর্ন্তভূক্ত হয়েছে। যেটি সকল শ্রেণীর পাঠকের জন্য অত্যন্ত সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় লেখা। তিন শতাধিকের অধিক ধর্ম বিষয়ক ভুক্তি সমৃদ্ধ এই গ্রন্থ আশাকরি সকল বাংলা ভাষাভাষি পাঠকের কাছে একটি অবশ্য পাঠ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।