"রম্য কথায় গ্রিক পুরাণ" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: মিথ কিংবা পুরাণকে বলা হয় চৈতন্যের প্রাচীনতম প্রকৃতি ও রূপ। পৌরাণিক কাহিনি, চরিত্রের প্রতি মানুষের আগ্রহ এবং জানার প্রবল আকাঙ্ক্ষা সব সময়ই লক্ষ করার মতাে। আদিম মানুষের জীবন ও সংস্কৃতির বিশাল এক অংশজুড়েও ছিল পুরাণকেন্দ্রিক মৌখিক সাহিত্যচর্চা। এই সাহিত্য থেকেই ক্রমে বিশ্বব্যাপী নাটক, কাব্য প্রভৃতি ধারার সাহিত্যচর্চার শুরু হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিক কিংবা সংস্কৃত নাটক যাই বলা হােক না কেন—সর্বক্ষেত্রে দেবদেবীর প্রাধান্যই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আদিরসাত্মক নানা ঘটনার সম্মিলন থাকায়ও পুরাণের প্রতি মানুষের আগ্রহ থাকার বিশেষ কারণ আছে বৈকি! তদুপরিও পৌরাণিক কাহিনি থেকে তৎকালীন সমাজ-সভ্যতা-সংস্কৃতির পরিচয় লাভ করা যায়। | গ্রিক পুরাণে বিদ্যমান দেবদেবীদের কূটচাল, যুদ্ধ-বিগ্রহ, নিগ্রহ, হাস্যকৌতুক, যৌনউদ্ভটতা প্রভৃতির কারণে কখনাে কখনাে মানুষ প্রাচীন মানুষের কল্পনা ও সৃজনশীলতাকে মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়। তবু বিশ্বব্যাপী মিথের চর্চা আজ অপরিহার্য এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়রূপে আবির্ভূত হয়েছে। তাবাসসুম নাজও সেই চর্চারই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে গেছেন। তিনি বাঙালির চিরায়ত হাস্যরসের ধারায় গ্রিক পুরাণকে এই গ্রন্থে তুলে ধরার প্রয়াস পান। ফলে তাবাসসুম নাজও আদিকালের লেখকগণের মতােই গ্রিক দেবদেবীদের মানুষের আদলেই পুনর্নির্মাণ করেন। তারপরও পুরাণ কিংবা মিথের শক্তিকে অনুধাবন করতে কষ্ট হয়। বরং পুনরায় পুরাণের শক্তিই উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। আশা করি পাঠক, তাবাসসুম নাজের ‘রম্য কথায় গ্রিক পুরাণ’ বইটিকে সাদরেই গ্রহণ করবে।
তাবাসসুম নাজের জন্ম ৩০ শে অক্টোবর। স্কুল কলেজ জীবনে টুকটাক লেখালেখি করতেন দেয়াল পত্রিকায়। ১৯৯৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এম বি বি এস পাশ করবার পর প্রবাস জীবন যাপন করছেন, বাংলা লিখবার আর সুযোগ হয়নি। হঠাৎ ২০১৭ সাল থেকে নিজের ভেতরে প্রচন্ড তাগিদ অনুভব করতে থাকেন ফের কলম ধরবার। সে তাগিদ থেকে নিজের জীবনের ছোট ছোট ঘটনা নিয়ে রম্য রচনা লিখতে আরম্ভ করেন ফেসবুকে নিজের ওয়ালে। একসময়ে সন্ধান পান ফেসবুকভিত্তিক সাহিত্য গ্রুপ পেন্সিলের। নিয়মিতভাবে সেখানে লেখা দিতে থাকেন তিনি--- বিদেশী রূপকথার অনুবাদ, প্রবন্ধ, রম্য রচনা। এরপর কাকতালীয়ভাবে ঢুকে পড়েন গ্রীক মিথলজির জগতে। গ্রীক দেবদেবীদের নিয়ে লিখতে গিয়ে হঠাৎ করে তাদের নিয়ে উপন্যাস লিখবার আইডিয়া পেয়ে যান। পরিণতিতে তার প্রথম উপন্যাস--- হেডিসের রাজ্যে। হেডিসের রাজ্যে ছিল কিশোর উপন্যাস। এরপর বড়দের জন্য লিখবার ইচ্ছা থেকে পেয়ে যান পরবর্তী উপন্যাসের প্লট--- বিবাহ বিভ্রাট অথবা ভালোবাসা। এবারে তিনি নিয়ে এলেন বড় আঙ্গিকের উপন্যাস--- রুদাবা।