ইতিহাস একটি সমাজবিজ্ঞান, সাধারণত ত্রয়ীবিষয়ের সমাবেশ ঘটে থাকেÑ স্থান, কাল ও সমাজ। কোনো একটি দেশ (স্থান)-এর কোনো বিশেষ কালের জনগোষ্ঠীর আচার-আচরণ ও কার্যকলাপ (সমাজ ও প্রকৃতির প্রভাব সন্দেহাতীত) ইতিহাসের মর্মবস্তু। জনগোষ্ঠীর আচার-আচরণ ও কার্যকলাপের ইতিহাসের গতিপ্রকৃতি ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপরও নির্ভরশীল। মহাদেশীয় ইউরোপের মূল ভূখ- থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন এবং চারদিকে সমুদ্রদ্বারাবেষ্টিত হওয়ায় ইংল্যান্ডের জনগোষ্ঠীর আচার-আচরণ ও কার্যকলাপের ইতিহাসে এক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে গড়ে ওঠে, যা ইউরোপীয় অন্য জাতির ক্ষেত্রে দেখা যায় না। ভূমির অনুর্বরতা ও শীতপ্রধান হওয়ায় প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে এই ভূখ-ের অধিবাসী বলিষ্ঠ ও কষ্টসহিষ্ণু হয়ে ওঠে। চারদিকে সমুদ্র হওয়ায় তারা স্বভাবতই সমুদ্রমুখী। খাদ্যাভাব ও সমুদ্রের সান্নিধ্যের কারণে তারা সামুদ্রিক বাণিজ্য ও উপনিবেশ স্থাপনে মনোযোগী হয়। নৌবিদ্যায় পারদর্শী ইংল্যান্ডের জনগোষ্ঠী বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নৌশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা অর্জন করে। ফলে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে উপনিবেশ ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্য স্থাপনে সমর্থ হয়। ইংল্যান্ডের ইতিহাস তাই বিশ্ব-ইতিহাসে প্রভাব ফেলে। ‘ইংল্যান্ড : সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’-এর শৈলীপদ্ধতি ইতিহাসের অবগুণ্ঠন উন্মোচনে ঘটনাক্রম ও তার বিশ্লেষণে লেখকের নিজস্ব চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত ও পরিলক্ষিত।