অনেক আর্থিক বিশেষজ্ঞ সুপারিশ করে চলেছেন, "কঠোর পরিশ্রম করুন, অর্থ সাশ্রয় করুন, ঋণ থেকে বেরিয়ে আসুন, আপনার সামর্থ্যের নীচে জীবনযাপন করুন, এবং মিউচুয়াল ফান্ডের একটি বহুমুখী পোর্টফোলিওতে বিনিয়োগ করুন। এটি খারাপ পরামর্শ নয় Í তবে এটি অপ্রচলিত পরামর্শ।
টাকার নিয়ম বদলে গেছে। আজ এখানে নতুন পুঁজিবাদ রয়েছে। অর্থ সাশ্রয়, ঋণ থেকে বেরিয়ে আসা, এবং পুরাতন পুঁজিবাদের যুগে বৈচিত্রপূর্ণ কাজ করেছিল। যারা পুরাতন পুঁজিবাদের “কঠোর পরিশ্রম এবং অর্থ সাশ্রয় করুন" মন্ত্রকে অনুসরণ করে তারা নতুন পুঁজিবাদের যুগে আর্থিক লড়াই করবে। আমাদের স্কুল সিস্টেমগুলিতে আর্থিক শিক্ষার অভাব একটি মারাতœক সমস্যা। আজকের বিশ্বে, আর্থিক শিক্ষা বাঁচার জন্য একেবারে অত্যাবশ্যকীয়- আমরা ধনী বা দরিদ্র, স্মার্ট না স্মার্ট কিনা তা নির্বিশেষে। আমরা এখন তথ্য যুগে বাস করি। তথ্য যুগ নিয়ে সমস্যা হ'ল তথ্য ওভারলোড।
আজ, খুব বেশি তথ্য আছে। আর্থিক শিক্ষা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ তা নীচের সমীকরণটি ব্যাখ্যা করে। তথ্য শিক্ষা = জ্ঞান আর্থিক শিক্ষা ব্যতীত লোকেরা দরকারী জ্ঞানে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ করতে পারে না। আর্থিক জ্ঞান না থাকলে মানুষ আর্থিক লড়াই করে। আর্থিক জ্ঞান না থাকলে লোকেরা বাড়ি কেনার মতো চিন্তা করে, ভাবে বাড়ি তাদের একটি স¤পদ, যদিও বাড়ি তাদের জন্য একটি দায়............... এসব কারনেই আর্থিক আইকিউ বাড়ানো প্রয়োজন।
আর্থিক আইকিউ # ১: আরও অর্থোপার্জন করা আর্থিক আইকিউ # ২: অর্থের সুরক্ষা করা আর্থিক আইকিউ #৩: অর্থের বাজেট করা আর্থিক আইকিউ #৪: অর্থের লিভারেজ করা আর্থিক আইকিউ #৫: আর্থিক তথ্য সমৃদ্ধ করা
জাপানী বংশোদ্ভূত লেখক রবার্ট তরু কিয়োসাকি বেড়ে উঠেছেন হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে। সংক্ষেপিত নাম ‘রবার্ট টি. কিয়োসাকি’ দিয়েই তিনি অধিক পরিচিত। শৈশবকাল শেষ করে পড়াশোনার জন্য তিনি পাড়ি জমান নিউ ইয়র্কে। একজন গ্র্যাজুয়েট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠার পর ইউ. এস. মেরিন কর্পসে যোগ দেন। এরপর পেশাজীবন তাঁকে নিয়ে যায় ভিয়েতনামে, মেরিন কর্পসের একজন অফিসার ও হেলিকপ্টার গানশিপের পাইলট হিসেবে। ভিয়েতনাম থেকে ফিরেই যাত্রা শুরু হয় এক যুদ্ধফেরত ব্যবসায়ীর। ১৯৭৭ সালে তিনি গড়ে তোলেন তার নিজের কোম্পানি, যা একইসাথে তাকে এনে দেয় অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক সফলতা। পরবর্তী সময়ে, ১৯৯৪ সালে তিনি ও তার সহধর্মিনী কিম কিয়োসাকি মিলে জন্ম দেন রিচ ড্যাড কোম্পানির। তারা এই কোম্পানিটির লক্ষ্য স্থির করেন- ‘মানবতার স্বার্থে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার উত্থাপন’। রবার্ট টি. কিয়োসাকির সেরা বই ধরা হয় ‘রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড’কে। এটি সর্বসময়ের সবচাইতে জনপ্রিয়, ব্যক্তিগত এবং অর্থনৈতিক বই হিসেবে বিখ্যাত। লাখো মানুষের টাকা সম্পর্কিত ধারণাকে তিনি এই বইটির মাধ্যমে বদলে দিতে পেরেছেন। এছাড়াও ২০০৫ সালে প্রকাশিত ‘বিফোর ইউ কুইট ইওর জব’ বইটিও নতুন উদ্যোক্তাদের নজর কেড়েছে। রবার্ট টি. কিয়োসাকি এর বই সমগ্র সাধারণত মোটিভেশনাল ঘরানার, তিনি নিজেও একজন সফল মোটিভেশনাল স্পিকার। মূলত পেশায় তিনি একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও কলামিস্ট। রবার্ট টি. কিয়োসাকি এর বই সমূহ এর মধ্যে রিচ ড্যাড সিরিজেরই ১৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে। সবমিলিয়ে বিক্রিত কপির সংখ্যা ২৬ মিলিয়ন পেরিয়ে গেছে এবং এই বইটি প্রায় ৫১টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।