তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি একজন প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তি সংগ্রামী। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি পূর্বাঞ্চল মুজিব বাহিনীর উপ-অধিনায়ক এবং স্বল্প সময়ের জন্য অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে তিনি “বাংলাদেশ” পত্রিকার সম্পাদক, প্রকাশক ও কলাম লেখকের খন্ডকালীন দায়িত্বও পালন করেন। তিনি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের অন্যতম উপদেষ্টা। তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব পরিষদ ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদেরও সভাপতি। ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী কুমিল্লা, ঢাকা, ম্যানচেষ্টার ও ইংল্যান্ডে পড়াশুনা করেন। তাঁর স্ত্রী মোর্শেদা চৌধুরী বিদেশ থেকে এম.বি.এ ডিগ্রি নিয়ে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর কোষাধ্যক্ষ, বড় সন্তান ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক, মেজো সন্তান ডাঃ মুনতাসির মান্নান চৌধুরী সিঙ্গাপুরে চিকিৎসক ও সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত এবং ছোট ছেলে মুনতাকিম মান্নান চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি.বি.এ. সাফোক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ও ম্যাসাচুচেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে এখন নিউ জার্সির স্টোকটোন বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক ও একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক। অধ্যাপক চৌধুরীর পুত্রবধূগণ যথাক্রমে ফারহানা খানম ফেরদৌসী ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি; ফারাহ ফাহরোজ চৌধুরী লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক এবং ড. ডরিস প্রিসিলা তাবাস্সুম হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি। আন্দোলন-সংগ্রামের পাশাপাশি তিনি লেখালেখিতে সিদ্ধহস্ত। এ যাবত তাঁর পেশাদারী গবেষণা ও প্রকাশনা ছাড়াও সমাজ পরিবর্তনের উপযোগী বহু লেখা ও গ্রন্থ বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রকাশিত হয়েছে। ড. চৌধুরী একজন বিরল প্রতিভার ব্যক্তিত্ব। ছাত্র-জীবনের সারাটা সময় আন্দোলন-সংগ্রামে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থেকেও তিনি জীবনের সবক'টি পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ বা প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এটাও তৎকালে এক বিরল ব্যাপারই ছিল। তার প্রতিভা জনকল্যাণে খুব যে ব্যবহৃত হয়েছে তা নয় । তবে তিনি নিজকে সৌভাগ্যবান মনে করেন, কেননা তিনি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালিত হতে দেখলেন, দেখলেন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তি, প্রত্যাশায় আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী এবং বিজয় দিবসের সুবর্ণ জয়ন্তি দেখার বা পালনের।