বাইশ বছর হয়ে যাচ্ছে। পড়াচ্ছি মাদরাসায়। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে একজন সিনিয়র শিক্ষকহিসাবেই। কওমী মাদরাসার সর্বোচ্চ ক্লাস দাওরায়ে হাদীস থেকে নীচের দিকে প্রায় সর্বত্রই পাঠদানের অভিজ্ঞতা আছে আমার ঝুলিতে। এমন কি একবছর ইফতা কোর্সেও পাঠদানের সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু এই দীর্ঘ সময় জুড়ে আমি এক তিক্ত অধ্যায়ের সাথে পরিচিত হয়েছি। সেই অধ্যায়েরই কিছু অবিন্যস্ত বিবরণ তুলে ধরেছি এই বইয়ে। আমরা মাদরাসায় আসি ইসলামী শরীয়তের ভাষা আরবী শেখার জন্য। বলতে গেলে সারা জীবন ব্যয় করে দিই এই লক্ষ হাসিলের গরজে; কিন্তু অর্জন হয় কতটুকু। বরাবর এসব তালেবে ইলমকে আমরা দোষারোপ করে থাকি। আমরা বুঝিয়ে থাকি, নিজেদের গাফলতির কারণেই তারা এমন পরিস্থিতির শিকার। কিন্তু আমি বিষয়টি এত সহজভাবে নিতে পারি না। তাদেরকে শতভাগ দোষারোপ করতে আমার মন সায় দেয় না। কেননা, যেসব প্রতিষ্ঠানে ইংরেজী চর্চা হয়, সেখানকার মূর্খ দারোয়ান আর নিরক্ষর বাবুর্চি পর্যন্ত কিছু না কিছু ইংরেজী বলতে পারে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের দোষ খুব সামান্য। দোষ অন্য জায়গায়। সেই দোষের জায়গাগুলো সনাক্ত করে দেওয়া আবশ্যক। এজন্যই এই বইটি লেখার প্রয়াস নেয়া হয়েছে। পাঠক! আপনি যে-ই হোন এবং যে বয়সেরই হোন, নিজে ইসলামী শরীয়তের ভাষা আরবী শিখুন। নিজের পরিবারের সদস্যদেরকে শেখানোর উদ্যোগ নিন। সহকর্মী, বন্ধু-বান্ধব ও সমাজের সাধারণ মুসলমানকে আরবী শিখতে উৎসাহ দিন এবং তাদের আরবী শেখানোর উপায়-উপকরণ নিয়ে ভাবুন; আবিষ্কার করুন।