বর্তমান যুগকে ‘বিজ্ঞানের যুগ’ বলা হয়ে থাকে। ‘বিজ্ঞানের যুগ’ বলেই হয়তো দেশের আনাচে কানাচে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠছে শত শত বিজ্ঞানলেখক এবং বিজ্ঞানবাজ সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ। এরা বিজ্ঞানের নামে যা গেলাচ্ছে, তা যতটা না বিজ্ঞান, তার চেয়ে বেশি কলাবিজ্ঞান। এদের বিজ্ঞান বুঝা আর পশ্চিমা একাডেমিক বিজ্ঞানী-দার্শনিকদের বিজ্ঞান বুঝার মাঝে আসমান-জমিন ফারাক। বিজ্ঞানের নামে অপবিজ্ঞান শেখানোর কূট-কৌশল নিয়েছে তারা।এরা ইসলামকে বিজ্ঞানের মুখোমুখি দাঁড় করায়। বলে, বিজ্ঞান আর ইসলাম নাকি সাংঘর্ষিক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাহ কে অবৈজ্ঞানিক বলে অবজ্ঞা করে। ১৪০০ বছর পূর্বের জীবনবিধান নাকি এই ‘আধুনিক’ যুগে চলবে না। অথচ ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ এবং চির-আধুনিক জীবনবিধান। ইসলাম হচ্ছে সবচেয়ে বেশি বিজ্ঞানসম্মত দ্বীন। আজকের বিজ্ঞানের জন্মের শত শত বছর পূর্বেই আমাদের রব তাঁর প্রিয়তম রাসূলের মাধ্যমে আমাদের সর্বাধুনিক বিজ্ঞান শিখিয়ে দিয়েছেন। আর তা হলো ইসলাম।‘কাঠগড়া’ বইটিতে লেখক চিকিৎসাবিদ্যা এবং গণিত শাস্ত্রে মুসলিমদের অবদান এবং তৎসংশ্লিষ্ট কয়েকটি সুন্নাহ’র মু’জিযা আলোচনা করেছেন। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের হুকুমের মাঝেই যে দুনিয়া-আখিরাতের কল্যাণ রয়েছে লেখক তার লেখায় বারবার এটাই ফুটিয়ে তুলেছেন।
বাংলাদেশের জনগণের বেশিরভাগই ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী, আর সংখ্যাগরিষ্ঠ এই মুসলিম জনগোষ্ঠীর নিজেদের ধর্মের বিভিন্ন বিষয়ে সম্যক জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রয়োজন হয় নানাবিধ পড়াশোনার। আর বিস্তৃত এই পড়াশোনার সুযোগ করে দিতে ইসলামের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে গবেষণা ও আলোচনা নিয়ে এবং বিভিন্ন ইসলামি আদর্শ ও মতবাদমূলক বই রচনা করে সম্প্রতি আলোচনায় এসেছেন ডা. শামসুল আরেফীন। পেশাগত জীবনে তিনি একজন সরকারি চাকরিজীবী হলেও একজন মুসলমান হিসেবে ইসলামি আদর্শে বলীয়ান হয়ে তিনি রচনা করেছেন বেশ কিছু ইসলাম সম্পর্কিত বই, যেগুলোর কোনোটি রচিত হয়েছে গল্পের আকারে, আবার কোনোটি রচিত হয়েছে প্রবন্ধ হিসেবে। ইসলাম বিষয়ক এই লেখক জন্মগ্রহণ করেন ১৯৮৯ সালে। সাদামাটাভাবে জীবন পার করা শামসুল আরেফীন শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করেছেন ক্যাডেট কলেজে। ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ থেকে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ থেকে তিনি এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। ডা. শামসুল আরেফীন এর বই এদেশীয় মুসলমানদের মাঝে লাভ করেছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। ডা. শামসুল আরেফীন এর বই সমূহ-তে ইসলামি মতবাদ ও আদর্শ প্রকাশের পাশাপাশি ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের যৌক্তিক ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, এবং ইসলামের বিরুদ্ধে আসা বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়াও সমাজের বিভিন্ন বিষয়ের ইসলামি ব্যাখ্যা ও ইসলামি উপায়ে চলার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিধানও উঠে এসেছে তাঁর বইগুলোতে। ডা. শামসুল আরেফীন এর বই সমগ্র এর মাঝে 'কষ্টিপাথর', 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড', 'মানসাঙ্ক' ইত্যাদি অন্যতম। মানুষকে দিনের শেষে সৃষ্টিকর্তার দেয়া সমাধানের পথেই ফিরে আসতে হবে- এ কথাই ফুটে ওঠে তার রচিত বইগুলোতে।