প্রাচীন ভারতে ঋগ্বেদ, সংহিতা, ব্রাহ্মণ, মহাভারত এবং বৌদ্ধদের পালি শাস্ত্রে রাজনীতির কথা উল্লেখ আছে। মধ্যযুগেও ভারতে রাষ্ট্রচিন্তার একটি উল্লেখযোগ্য ধারা পরিলক্ষিত হয়। সুলতানি সাম্রাজ্যের মতো মোগল সাম্রাজ্যেও রাজনীতি একটি বিশেষ প্রায়োগিক রূপ লাভ করে। সক্রেটিসীয় রাজনৈতিক দার্শনিকগণ পশ্চিমা রাজনৈতিক ভাবধারার পূর্বসূরি। অ্যারিস্টোটলই প্রথম ব্যক্তি যিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কার্যকর সংজ্ঞা প্রদান করেন। প্লেটো ও অ্যারিস্টোটলদের মতো রাজনৈতিক দার্শনিকগণ এমনভাবে রাজনৈতিক চিন্তাধারার বিশ্লেষণ শুরু করেন যে তা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বৈজ্ঞানিক ধারণাসমূহে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। সাধারণভাবে ভারতে ইউরোপীয় বণিকশক্তি, পাশাপাশি রাজশক্তির আগমনের মাধ্যমেই আধুনিক যুগের সূচনা হয়েছে বলে মনে করা হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যা রাষ্ট্র, সরকার, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও রাজনৈতিক আচরণ নিয়ে আলোচনা করে। দেশবিভাগের পর থেকে প্রায় ২৪ বছর পাকিস্তানের সাথে বর্তমান বাংলাদেশ মিলিত অবস্থায় ছিল। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশ গঠিত হয়। স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়। ১৮৬৩ সালে বিখ্যাত গেটিসবার্গ ভাষণে আব্রাহাম লিংকন বলেন, Government of the people, by the people, for the people, shall not perish from the earth. এই মার্কিনি গণতন্ত্র অনুসরণ করা হলেও সব ক্ষেত্রে এর প্রয়োগ দেখা যায় না বাংলাদেশে। ভোটের নামে প্রহসন, ক্ষমতার অপব্যবহার, জনগণের উদাসীনতা ও অজ্ঞতার ফলে গণতন্ত্রের সুফল থেকে বঞ্চিত বাংলাদেশ। নানা অপশক্তির হাতে জিম্মি দেশের অর্থনীতি ও মানুষের জীবন। আইনের শাসন হয়ে পড়েছে সীমাবদ্ধ। স্বজনপ্রীতি আর দুর্নীতি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব থেকে মুক্তি পেতে সিনেট ব্যবস্থা বা জবাবদিহিমূলক একটি শক্তিশালী কাঠামো তৈরি ও জনগণের রাজনৈতিক সচেতনতা খুবই জরুরি। দীর্ঘমেয়াদি সরকার ও তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার পক্ষে নানা যুক্তি ও বিশ্লেষণ করেছেন আলাদিন সামির সুমন। যে স্বর্গের কথা আমরা মৃত্যুপরবর্তী জীবনে পাওয়ার কথা শুনি তা আমরা পেতে পারি জীবত অবস্থাতেই, যদি রাষ্ট্রীয় অপশক্তিকে নির্মূল করা সম্ভব হয়। সুচিন্তিত ও অকাট্য দলিল-প্রমাণ দিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধকে শানিত করার জন্য এটি একটি অপরিহার্য বই।