ভাঁজ ভাঙা শাড়ির ন্যাপথলিনের ঘ্রাণের মতো এ কবিতাগুলো। নরম কোমল লাজুক এর ভাষা। পূর্ণিমা রাতের চাঁদের নিচে ভেসে ভেসে চলা কিছু হালকা কালো রঙের মেঘের মতো শব্দ। সবুজ ঘাসের ঢগায় ঢলমল করা একফোঁটা শিশিরের মতো কবিতাগুলোর সৌন্দর্য। যেন কবিতার প্রশংসায় কবিতা লিখতে হয়। মাহজুবা দীপা কবি শব্দটি কিংবা কবির শক্তিমত্তাকে এক অনন্য মাত্রা দিয়েছেন তার এ কবিতাগুলো লিখে। বাংলা কবিতার যে বিশুদ্ধ ও অবারিত আবেগ তা দীপার কবিতাকে করেছে অনন্য। নারী পুরুষের ঊর্ধ্বে উঠে শুধুমাত্র কবি সত্বাকে ধারণ করা খুবই কঠিন সাধনার বিষয়। আর এ সাধনার জন্য তাই সিগ্ধ ও সুদৃঢ় মন। স্থিরচিত্ত ও মৌন মধুর নিবেদন। কবিতার জন্য যে ত্যাগ চাই তা না দিলে কবিতা হয়ে পড়ে দুর্বল, রুগ্ণ অথবা ¤øান, ধূসর। গল্প যেন দৃশ্যত হয় কবিতায়! উপমার সূ² কারুকাজে কবিতা হয়ে ওঠে নান্দনিক। কবিতা কেবল প্রেমের কথাই বলে না, প্রেমিকের কথাও বলে। সুদীপ্ত, মাহজুবা দীপার একটি চরিত্র। সুদীপ্তর ভালোবাসা পাওয়া আর না পাওয়ার যে আবেগ, যে অপেক্ষা, যে প্রার্থনা তা যেন চিরায়ত, চিরস্থায়ী। প্রেমের এক নিগূঢ় তত্ত¡-উপাত্ত তার এক সহজ সমাধান যেন এ কবিতারগুলোর মাঝে উঁকি মারে। কবিতার দীর্ঘস্থায়ী যে আবেশ, আকর্ষণ তা থেকে বিমুখ করবে না এ কবিতা ও কবি মাহজুবা দীপা।
লেখকের জন্ম বুড়িগঙ্গার কোল ঘেঁষে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জে I শৈশব ও কৈশোর বেড়ে ওঠেছেন প্রকৃতির নির্মল পরিবেশে সবুজের কাছাকাছি I জীবনের বড় একটা অংশ জুড়ে রয়েছে মা, মাটি, মাটির ঘ্রান ! প্রাথমিক শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি হয় ২০০৫ সালে I ২০০৮ সালে সাহিত্য চর্চার জন্য ভর্তি হন লালমাটিয়া মহিলা মহাবিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে I ২০০৯ সালে পাড়ি জমান সুদূর অস্ট্রেলিয়া । কর্মরত আছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে । অবসর কাটে ছবি এঁকে, কবিতা লিখে । ব্যক্তি জীবন যখন যান্ত্রিকতায় ভরে ওঠে তখন ই স্বস্তি খুজেঁন কবিতায় I কবিতা লিখার মূল অনুষঙ্গ মা, মাটি, অবারিত সবুজ গ্রাম, পিছনে ফেলে আসা রঙিন শৈশব, জীবন-জীবনবোধ, অপূর্ণতা ও পরপাড় I